গাঁজা ধরিয়ে, বিএনপি বলিয়ে ছাত্রকে পুলিশে দিল ছাত্রলীগ

Looks like you've blocked notifications!
ঢাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক কাউসার আল আমিন। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সান্ধ্যকালীন কোর্সের এক ছাত্রকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। অভিযোগ উঠেছে, ব্যক্তিগত শত্রুতার জের ধরে তাঁকে  মারধর করা হয়েছে।

ওই শিক্ষার্থীর নাম আহমেদ উল্লাহ সাদ্দাম। গতকাল বুধবার রাত ৯টা থেকে দিবাগত রাত ১টা পর্যন্ত সাদ্দামকে মারধর করে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়।

জানা যায়, বুধবার রাত ৯টার দিকে সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউট থেকে ক্লাস করে বেরোনোর পর আহমেদ উল্লাহ সাদ্দামকে বিশ্ববিদ্যালয় সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক কাউসার আল আমিনসহ আরো কয়েকজন ধরে নিয়ে যায়। পরে ঢাকা কলেজের পুকুরের পাড়ে নিয়ে মারধর করে। মারধরের একপর্যায়ে তাঁকে গাঁজা ও  ফেনসিডিল নিয়ে ঘুরে বলে স্বীকারোক্তি দিতে বলা হয়। কিন্তু সে স্বীকারোক্তি না দেওয়ায় তাকে আরো মারধর করে। সাদ্দামকে তাঁর বাসা থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে ওই ছাত্রলীগ নেতাদের দিতে বলা হয়। কিন্তু সে সেটাও না করায় তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কয়েক দফা মারধরের পর সাদ্দাম বিএনপি করে এই মর্মে স্বীকারোক্তি আদায় করে তাঁকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়। এ সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, মারধরের শিকার আহমেদ উল্লাহ সাদ্দাম ও ছাত্রলীগ নেতা কাউসার আল আমিন উভয়ের বাসা পাবনাতে। কাউসার আল আমিনের বাবা মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর কয়েকজন ভাইবোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করেন। আহমেদ উল্লাহ সাদ্দাম তাঁর ফেসবুকে কোটার বিপক্ষে লেখালেখি করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কাউসার তাঁকে মারধর করেন।

মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত কাওসার আল আমিন অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘ওই রকম কোনো কিছু হয়নি। আর এ বিষয়টার কোনো কিছু আমি জানিও না।’ তবে তিনি সরাসরি ঘটনার বিস্তারিত জানাবেন বলে জানান।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘পুলিশে দেওয়া হয়েছে কিছু তথ্য জানার জন্য।’ কী তথ্য জানার জন্য এমন প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদ করছে। জিজ্ঞাসাবাদ করে আমাকে জানাবে কেন ওকে দেওয়া হয়েছে এবং কী করেছে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘ছেলেটি অনেক আগে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিত। ছাত্রদলের নেতাদের উসকানিতে বিভিন্ন সরকারবিরোধী পোস্ট দিত। সেই সন্দেহে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করি এবং পরে পুলিশে দেই। মামলা দেওয়া হয়নি। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

পুলিশে সোপর্দের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাফর আলী বিশ্বাস জানান, ওই ছাত্র তাঁদের কাছে আছে। তিনি বলেন, ‘তাঁর ব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।’ কেন তাঁদের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কেউ বলে বিএনপি করে, কেউ বলে জামায়াত করে।’ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন বলে জানান তিনি।