পাবিপ্রবিতে উপাচার্য-শিক্ষকরা অবরুদ্ধ, রাতে মুক্ত
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) সেমিস্টার ফি কমানো, ইয়ার ড্রপ প্রথা বাতিলসহ সাত দফা দাবিতে উপাচার্যসহ শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুর থেকে এই ঘটনা ঘটে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়। এরপর একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন ও উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। এখনো পর্যন্ত এসব তালা ঝুলছে বলে জানা গেছে। তবে আটকেপড়া শিক্ষকরা পুলিশের সহায়তায় রাত ৮টার দিকে বের হয়ে আসেন।
আন্দোলনকারীরা জানায়, গত জুলাই মাসে লাগাতার পাঁচদিন শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি কমিটি করে। সেই কমিটি ১৫ দিনের সময় নেয়। সেই সময় পার হলেও ওই কমিটি কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের।
আন্দোলনকারী একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরীক্ষায় নির্ধারিত জিপিএ না পাওয়া শিক্ষার্থীদের ও দুই বিষয়ে অকৃতকার্য হলে ইয়ার ড্রপের প্রথা চালু করে এবং যারা মান উন্নয়ন পরীক্ষা দেয় তাদের ক্রেডিট ফি ৭৫ টাকার পরিবর্তে ৩০০ টাকা নির্ধারণ করে। এসব নিয়ম বাতিলসহ ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির মানোন্নয়ন সংখ্যা চার বছরে ৪ থেকে ১৬ করা, একাডেমিক কোর্সের সময় ছয় বছর থেকে সাত বছর করা এবং ইমপ্রুভ বা ব্যাকলগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বি গ্রেড থেকে বাড়িয়ে এ প্লাস চালু করার দাবিতে গত মাসে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
তার পরও শিক্ষার্থীদের কথা না শুনলে গত মাসে আন্দোলন শুরু করলে উপাচার্য একটি কমিটি গঠন করে দেন। সেই কমিটিও গত ১৫ দিনে কোনো কাজ করেনি। এজন্য আবারও এই আন্দোলন শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের দাবি না মানলে আন্দোলন চলবে বলেও জানিায়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এমবিএ প্রোগ্রামের ভাইভা পরীক্ষা ছিল। এক্সটারনাল স্যাররা এসেও ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারেন নাই।’
পাবিপ্রবির টুরিজম ও হসপিটালিটি ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান অবরুদ্ধ থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আন্দোলন করছেন মূলত অষ্টম, নবম ও দশম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। এদের সাথে বসে খোলামেলা আলাপ-আলোচনা করেই সমস্যার সমাধান সম্ভব, অথচ কী কারণে বর্তমান প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে কালক্ষেপণ করছেন, আমার বোধগম্য নয়।’
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি আওয়াল কবির জয় বলেন, ‘বিষয়টি দ্রুত সুরাহা করার জন্যে ডিন কমিটি কাজ করছেন। খুব শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে বলে আমার বিশ্বাস।’
ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন ও কমিটির প্রধান খাইরুল আলম বলেন, ‘কমিটি এরই মধ্যেই দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যোগাযোগ করে তাদের নিয়ম-নীতি পর্যালোচনা করছে।’ খুব শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে বলেও জানান তিনি।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এম রোস্তম আলী ফরাজী খান মোহাম্মদ বলেন, এরই মধ্যেই শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া নিয়ে আমাদের কমিটি কাজ করছে। একটু সময় তো লাগবেই। যেহেতু দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম-নীতি দেখে একটি শিক্ষার্থীদের জন্য সময়োপযোগী আইন প্রণয়ন করা হবে বলেও জানান তিনি।