ঢাবি শিক্ষককে নিয়ে বাজে মন্তব্য, ৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মনোবিজ্ঞান বিভাগের সাত শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভাগীয় এক শিক্ষককে টাক বলায় তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
তবে, এ অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়, টাক বলায় না, শিক্ষকের নামে বাজে মন্তব্য করায় তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে, কী মন্তব্য বা কী ধরনের মন্তব্য করেছেন শিক্ষার্থীরা, সে বিষয়ে তারা কিছু জানায়নি।
মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলার সময় পরীক্ষার হলে অনিয়মের অভিযোগে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে শাস্তি দেন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এ কে এম রেজাউল করিম। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিভাগের এক ছাত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাঁকে ‘টাক’ সম্বোধন করে একটি স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসটিতে শাস্তি পাওয়া অন্য শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন মন্তব্য করেন।
পরে শিক্ষার্থীরা বাজে মন্তব্য করেছেন অভিযোগ করে বিভাগীয় প্রশাসনের কাছে মন্তব্যকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ওই শিক্ষক। বিষয়টি জানাজানি হলে বিভাগের একাডেমিক কমিটি তদন্ত শুরু করে।
তদন্তের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের এক সভায় মনোবিজ্ঞান বিভাগের সাত শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রায় ২০ দিন পর গতকাল সোমবার বিভাগ থেকে তাঁদের বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ আকারে জানানো হয়।
বহিষ্কৃতরা হলেন ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের খাইরুন নিসা ও উম্মে হাবিবা তানজিলা, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের মিনহাজুল আবেদিন, ফাতিমা ও সামিরা মাহজাবিন এবং ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের আব্দুল্লাহ-হিল-বাকী ও অদিতি সরকার। এর মধ্যে খাইরুন নিসা ও মিনহাজুল আবেদীনকে এক বছর ও বাকিদের ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়৷
বহিষ্কার হওয়া ছাত্রী খাইরুন নিসা জানান, পরীক্ষার হলে তাঁর খাতা নিয়ে যাওয়ায় তিনি সেই স্ট্যাটাসটি দেন। তবে, ওই শিক্ষক বা কাউকে উদ্দেশ করে তিনি কিছু বলেননি বলে দাবি করেন।
এ বিষয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন ড. মাহফুজা খানম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘টাক বলার কারণে নয়, সাত শিক্ষার্থী ওই শিক্ষককে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বাজে মন্তব্য করেছেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রক্টরিয়াল বডির সিদ্ধান্তে তাদের বহিষ্কার করা হয়।’ তবে শিক্ষার্থীরা কী ধরনের মন্তব্য করেছেন তা জানাননি তিনি।
এ বিষয়ে জানতে অধ্যাপক ড. এ কে এম রেজাউল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে, তাঁকে পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘মনোবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষককে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশোভন মন্তব্য করেন একই বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী। এ অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট তাদের বিভিন্ন মেয়াদের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।’