‘জামায়াতের বক্তব্যে কোটা আন্দোলনকারীরা মাঠে’
জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বক্তব্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনে তরুণরা মাঠে নেমেছিল বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। তিনি বলেন, ‘যুগের চাহিদা বিবেচনা করে শিক্ষক সমিতি তাদের সমর্থন জানিয়েছিল।’
আজ বুধবার দুপুরে ঢাবির কলা ভবনের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন মাকসুদ কামাল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তি ও ঢাবিতে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির প্রতিবাদে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে ঢাবি শিক্ষক সমিতি।
মানববন্ধনে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, ‘২০০২ বা ২০০৩ সালে জামায়াত ইসলামীর তৎকালীন সংসদীয় দলের নেতা মতিউর রহমান নিজামী জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের কথা বলেছিলেন। ২০০৩ সালে দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী বলেছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাদ দিতে হবে। ওই দুই রাজাকারের একজনের ফাঁসি হয়েছে, আরেকজনের বিচারাধীন। তারা যে বক্তব্য রেখেছে সেই বিষয়টি নিয়ে আমাদের বুদ্ধিদীপ্ত তরুণরা মাঠে নেমেছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সদস্যরা যুগের চাহিদার কথা বিবেচনা করে তাদের সমর্থন জানিয়েছিলাম।’
মাকসুদ কামাল বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই যে কথা বলেছি, কোটা আন্দোলন এ দেশে ছাত্রদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন নয়। এটা নির্বাচনের বছর। ঢাবিকে অস্থিতিশীল করে সরকারকে অস্থিতিশীল করে যাতে করে ক্ষমতায় যাওয়ার একটি পথ উন্মোচন করা যায় সে ষড়যন্ত্রই করা হয়েছে।’
নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাবেশে অধ্যাপক আকমল হোসেনের বক্তব্যের প্রসঙ্গে শিক্ষক সমিতির সভাপতি বলেন, ‘তাঁর বক্তব্যের সময় যখন হাততালি দেওয়া হয় তখন এই কোটা আন্দোলন কোন দিকে ধাবিত হয় সেটি আর বোঝার বাকি থাকে না।’
মানববন্ধনে অধ্যাপক আকমলকে তাঁর বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলেন মাকসুদ কামাল। তিনি বলেন, ‘এমন কথা তিনি আর ভবিষ্যতে বলবেন না এবং অন্তরে যদি এমন কথা বিশ্বাস করে থাকেন তাহলে অন্তর থেকে সে কথা ধুয়ে মুছে ফেলবেন। তাহলে শিক্ষক সমিতি এ বিষয়ে বিবেচনা করে দেখবে ভবিষ্যতে আর কোনো কর্মসূচি নেবে কি না। এটা যদি না হয় শিক্ষক সমিতি এ বিষয়ে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলন করবে। এমনকি ভবিষ্যতে এ দেশের কোনো নাগরিক যেন এমন কথা মুখ থেকে বের করতে না পারেন যার মাধ্যমে এ দেশের মানুষকে অপমান করা হয় শিক্ষক সমিতি সেই পথে যাবে।’
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম, কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিতা রেজওয়ানা, বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া, মুহসিন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নিজামুল ইসলাম ভুঁইয়া, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. আব্দুর রহিম প্রমুখ।