‘প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় আনন্দ মিছিল, আর প্রজ্ঞাপন চাইলে হাতুড়ি?’
‘প্রধানমন্ত্রী যখন ঘোষণা দিলেন কোটা থাকবে না, তখন আপনারা আনন্দ মিছিল করলেন। বললেন, আপনারা আগে ছাত্র, পরে লীগ। কিন্তু যখন ছাত্ররা প্রজ্ঞাপনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করতে গেল তখনি হাতুড়ি হামলা চালাল।’
ছাত্রলীগের উদ্দেশে কথাগুলো বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষিকা সামিনা লুৎফা।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মোকাররম ভবন এলাকায় মানববন্ধন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে ছিলেন কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকাও। সেখানেই সামিনা লুৎফা এসব কথা বলেন।
সামিনা লুৎফা আরো বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। এই আন্দোলনে ইন্ধন দিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত ঐতিহ্য ছাত্রদের আন্দোলন করার জন্য ইন্ধন দিচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ই আমাদের প্রতিবাদ করতে শিখিয়েছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র ভুল করতে পারে, কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা ভুল করতে পারে না।’
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন অনেক দিন হলো চলছে। এটা ছাত্রদের আন্দোলন। আমরা এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে তখনি পাশে দাঁড়িয়েছি, যখন ছাত্রদের ওপর হামলা হয়েছে। আমরা সচেতনভাবে তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। আমরা দেখছি, যাদের উপর হামলা চালানো হয়েছে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাদের রিমান্ডে নিয়ে অত্যাচার করা হচ্ছে। যারা নিপীড়ক, তারা সবাই চিহ্নিত। কিন্তু তাদের বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না।’
ফাহমিদুল হক আরো বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, সরকার যেদিকে অবস্থান নেয় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষক সমিতি সেই দিকেই অবস্থান নেয়। তারা নিজস্বতা হারিয়ে ফেলেছে। আমরা যারা শিক্ষক শিক্ষার্থীরা এই রোদে দাঁড়িয়ে আছি, তাদের অনেক একাডেমিক কার্যক্রম রয়েছে। আমরা এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে চাই না। সরকারকে বলব ছাত্রদের দাবি মেনে নিয়ে আমাদের ক্লাসে ফিরতে সাহায্য করুন।’
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের হাতে বিভিন্ন রকম প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। প্ল্যাকার্ডগুলোতে লেখা ছিল ‘হাতুড়ির স্থান পেরেকের উপর, ছাত্রের উপর নয়’, ‘ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা চাই’, ‘আমার ক্যাম্পাসে আমি নিরাপদ তো?’, ‘ছাত্র আপনার, দায় নেবেন না কেন?’
মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, তানজিম উদ্দিন খান, রুশাদ ফরিদীসহ বিভিন্ন বিভাগের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী।