ঢাবি ক্যাম্পাসে নিষেধাজ্ঞা, প্রভোস্ট কমিটির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো বাতিলের দাবি জানিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান জোটের নেতাকর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন ছাত্র ফেডারেশনের ঢাবি শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির। এ সময় তিনি তিনদফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো-নিরাপত্তার অজুহাতে আন্দোলন দমনের জন্য আরোপিত সব অগণতান্ত্রিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা, ঢাবি ক্যাম্পাস ঐতিহাসিকভাবে ছাত্র-জনতার জন্য উন্মুক্ত করা এবং হলগুলোতে ছাত্রদের সভা-সমাবেশ করার জন্য প্রভোস্টের অনুমতির সিদ্ধান্ত বাতিল করা।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ‘কিছু জানে না-শোনেনি’ বক্তব্যকে দায়িত্বহীন বলে মন্তব্য করেন উম্মে হাবিবা বেনজির। এ ছাড়া তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্যাতনের শিকার তরিকুল ও অন্য আহত শিক্ষার্থীদের কথা তুলে ধরেন। তাদের পরিবারকেও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
উম্মে হাবিবা বেনজির বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা ও নিরাপত্তা সমুন্নত রাখা’র নামে ঢাবিতে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ক্যাম্পাস সবার জন্য উন্মুক্ত। দেশের জনগণের অর্থে এ প্রতিষ্ঠান পরিচালিত। এ প্রতিষ্ঠানে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিজয় হয়েছে। দীর্ঘদিনের ছাত্র-জনতার রক্তে অর্জিত এ গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া যায় না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাবি সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মো. ফয়েজউল্লাহ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আরেক অংশের আহ্বায়ক আলমগীর সুজন প্রমুখ।
গত ৫ জুলাই ঢাবি প্রভোস্ট কমিটির একটি সভা হয়। সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও হলগুলোতে প্রবেশ ও আচরণবিধিতে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
কমিটিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ঢাবি ক্যাম্পাসে বহিরাগতরা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া প্রবেশ, ঘোরাফেরা বা কোনো কার্যক্রম করতে পারবে না। হলগুলোতে কোনো অছাত্র, বহিষ্কৃত ছাত্র, বহিরাগত এমনকি অতিথিদেরও থাকতে দেওয়া হবে না। তাদের তাড়াতে কর্তৃপক্ষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নেবে।
এ ছাড়া হলগুলোতে সভা, সমাবেশ বা মিছিল করতে নিষেধ করা হয়েছে। হলে নিষিদ্ধ ঘোষিত কোনো সংগঠনের সদস্য আছে কি না, সেদিকে খেয়াল রাখতেও নির্দেশ দেয় এই প্রভোস্ট কমিটি।
ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তা চৌকি বসানো হবে বলেও ঘোষণা দেন ঢাবি উপাচার্য।