বাস বাড়ানোর দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) পরিবহন সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। ফলে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের নানা ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। পরিবহন সংকটের প্রতিবাদ জানিয়ে ও বাসের সংখ্যা বাড়ানোর দাবিতে আজ শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র মতে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজার। কিন্তু এই শিক্ষার্থীদের জন্য নেই পর্যাপ্ত আবাসিক ব্যাবস্থা। বাধ্য হয়ে সিংহভাগ শিক্ষার্থী থাকেন কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলা শহরে। সেখানে থাকা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আনা নেওয়ার জন্য যানবাহনের সংখ্যা খুবই কম। শিক্ষার্থীরা মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় সুযোগ পাওয়ার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে প্রতিদিন সিট পাওয়া বেশি কঠিন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থী তাসলীমা জানান বলেন, ‘একটি সিটের জন্য আমাদের প্রতিদিন অনেক সময় ব্যয় করতে হয়। সিট না পেলে এই ভাঙা রাস্তায় প্রতিনিয়ত ২২ থেকে ২৪ কিলোমিটার বাসের গেটে ঝুলে থাকতে হয়।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার তিন যুগেও শতভাগ আবাসিক সুবিধা দেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৯০ শতাংশ শিক্ষক, ৭৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ও ৮৫ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী বাধ্য হয়ে দুই জেলা শহরে অবস্থান করেন।
এদিকে এ বিপুলসংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে পরিবহন সেবা দেওয়ার মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা নেই। এ ছাড়া নতুন একাধিক বিভাগ খোলায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি পরিবহন সংখ্যা। নিজস্ব বাস মাত্র ১৬টি। এর মধ্যে আবার সচল আছে ১১টি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বাধ্য হয়ে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মালিক সমিতির দ্বারস্থ হতে হয়। এ সুযোগে মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য ফিটনেসবিহীন গাড়ি প্রদান করে বলে অভিযোগ রয়েছে। লক্কড়ঝক্কড় এসব গাড়িতে চলাচলে অতিষ্ঠ শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা সবাই।
এসব ভোগান্তির প্রতিবাদ জানিয়ে আজ দুপুর দেড়টার দিকে ১৫ মিনিট বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক অবরোধ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার রহমানের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন তাঁরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগামীকাল থেকে কুষ্টিয়া রুটে চারটি ও ঝিনাইদহ রুটে দুটি নতুন বাস বৃদ্ধির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ আবাসিকতা না থাকায় আমাদের পরিবহন ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল হতে হচ্ছে। পরিবহন সংকট সমাধানে অতিদ্রুত চারটি নিজস্ব বাস সংস্কার করা হচ্ছে।’