‘ছাত্রলীগের সম্মেলন চাস?’, বলেই ইট দিয়ে আঘাত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রলীগের সম্মেলন প্রত্যাশীদের মারধর করেছেন বর্তমান কমিটির মাস্টার দ্য সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের পদধারীরা।
গতকাল শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে এই ঘটনা ঘটে। এতে দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন মাস্টার দ্যা সূর্যসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মেশকাত হাসান এবং স্যার এ এফ রহমান হলের সাগর রহমান।
এ ছাড়া সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের আবাসিক শিক্ষার্থী কামাল হোসেনও আহত হন। আহতরা সবাই দর্শন বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে মেশকাত ও সাগর হোসেন ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের এক নেতা জানান, হল ছাত্রলীগের ক্রিড়াবিষয়ক উপসম্পাদক আসাদ পাঠান (মনোবিজ্ঞান), উপ-দপ্তর সম্পাদক ইমরান হোসেন সাগরের (স্বাস্থ্য অর্থনীতি) নেতৃত্বে ব্যাংকিং বিভাগের সারোয়ার হোসেন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মশিউর রহমানসহ ২০ থেকে ২৫ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী তাদের ওপর লাঠি, রড, ইটপাটকেল নিয়ে হামলা করে। এতে তাঁরা আহত হন। হামলাকারীরা সবাই সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম সরোয়ারের অনুসারী বলেও জানান ওই নেতা।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, মেশকাত, সাগর ও কামাল মধুর ক্যান্টিনে বসে ছিলেন। এমন সময় সূর্যসেন হলের সভাপতি গোলাম সরোয়ারের অনুসারীরা এসে মেশকাতের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করে পাশে বসা সাগর রহমানকে মারধর করে। একই সাথে কিছু নেতাকর্মী মেশকাতকেও মারধর করে। মারধর করার সময় তারা বলে যে, ‘তোরা সম্মেলন চাস? সরোয়ার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বলিস? আবিদ আল হাসানের বিরুদ্ধে কথা বলিস?’ এ সময় কামাল তাদের থামাতে গেলে তাঁকেও মারা হয়। এতে তাঁরা জখম অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
এসএম হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি কামাল বলেন, তাঁদের দুজনকে মারতে মারতে মল চত্বরে নিয়ে আসা হয়। সেখানে থাকা ইট দিয়ে মেশকাত ও সাগরের মাথায় আঘাত করে। তারা মাটিতে পড়ে গেলেও সরোয়ারের কয়েকজন কর্মী তাঁদের লাথি দেয় এবং ইট দিয়ে মারে। পরে তাদের দুজনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সিটি স্কানের পর ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
আহত মেশকাত ও সাগর দুজনকে সিটি স্ক্যান করানোর পরে ডাক্তার তাদের ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেন। তবে তাঁরা দুজনেই অচেতন থাকায় তাঁদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
যাদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তাঁরা ক্যাম্পাসে গোলাম সরোয়ারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি এই ঘটনা শুনেছি। আহতদের খোজ খবর নিয়েছি। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
অন্যদিকে এই গোলাম সরোয়ার ঢাবি শাখার ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসানের অনুসারী। আবিদ আল হাসান বলেন, ‘যারা মারধরে জড়িয়েছে তারা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত। তার পরও যারা এই কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’