পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়ে এক বছরের জন্য শ্রীঘরে!
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ‘প্রক্সি’ দিতে এসেছিলেন কাওসার আলী ও আলম। এক ঘণ্টা পরীক্ষা দিয়েছেনও। পরীক্ষা শেষ করে পূর্ব পরিকল্পনামতো বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়ামের পেছনের এলাকায় দেখা করতে যান উভয়ে। সেখানেই ধরা পড়েন। এখন দুজনেই শ্রীঘরে!
আজ সোমবার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার পর এ ঘটনা ঘটে। কাওসার ও আলম সামাজিক অনুষদভুক্ত ‘বি ইউনিটের পরীক্ষা দিতে এসে ধরা পড়েন।
কাওসার ও আলমকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং যথাক্রমে ৪০ ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। কাওসার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য বিভাগের শিক্ষার্থী এবং বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের ছাত্র।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের তৃতীয় শিফটে দুপুর দেড়টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই শিফটে চুক্তির মাধ্যমে কাউসার আলী মীর মোশাররফ হোসেন একাডেমিক ভবনের ২৩৭ নম্বর কক্ষে রিফাত শেখ নামের এক শিক্ষার্থীর বদলি পরীক্ষা দেন। একইভাবে আলম ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবনের ১০৮ নম্বর কক্ষে সোহানুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থীর বদলি পরীক্ষা দেন। পরীক্ষা শেষে চুক্তি অনুযায়ী তাঁরা জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে দেখা করতে ক্যাম্পাসের জিমনেসিয়ামের পেছনের এলাকায় যায়। এ সময় গোপন তথ্যের ভিত্তিতে প্রশাসন সেখানে অভিযান চালিয়ে কাওসার আলী এবং আলমকে আটক করে। আটককৃতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে কাওসার আলী ও আলম বদলি পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি জানায়। এ সময় প্রতি ইউনিটে পরীক্ষা দেওয়ার বিনিময়ে ৪০ হাজার টাকা চুক্তি হয়েছিল বলেও স্বীকার করেন তাঁরা।
পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পাবলিক পরীক্ষাসমূহ অপরাধ আইন ১৯৮০-এর ৩ ধারা অনুযায়ী কাওসার আলীকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৪০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো এক মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন। একই সঙ্গে আলমকে এক বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এ রায় প্রদান করেন কুষ্টিয়া সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম কমল।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘প্রক্সিবাজদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ চক্রের মূল হোতাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ বলেন,‘ দণ্ডপ্রাপ্ত কাওসার আলী ও আলমকে জেলহাজতে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’