সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা রয়েছে : শিক্ষামন্ত্রী
মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ালেও সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায় কিনা, সেটি বিবেচনায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
ডা. দীপু মনি বলেন, ‘এই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায় কিনা, আমরা চেষ্টা করছি। এ বছর যাদের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল, তাদের সব প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু আগামী বছর যারা পরীক্ষা দেবে, তাদের তো পড়াশোনায় ব্যাঘাত হয়েছে। তাদের জন্যই সীমিত পরিসরে হলেও নির্ধারিত পরীক্ষার আগে যদি সময় দেওয়া যায়, তাহলে হয়তো তারা সিলেবাস শেষ করতে পারবে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সীমিত পরিসরে তাদের ক্লাসরুমে নিয়ে এসে যেসব সমস্যা আছে, সেটি কীভাবে সমাধান করা যায়, সেটি দেখছি। অনেকে বলছে, স্কুলের আসার বিষয়টা হয়তো ভুলেই যাচ্ছে তারা। তবে সবকিছুই নির্ভর করবে করোনা পরিস্থিতির ওপর।’
সামনের বছর এসএসসি পরীক্ষা পেছানো হতে পারে কিনা, সে বিষয়ে দীপু মনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে কিনা, সেটি দেখব। সেটি পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। আমরা এখনই বলতে পারছি না, পরীক্ষা পেছাবে কিনা, সেটি সময় হলেই আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা হয়তো নেওয়া যাবে। এইচএসসির মতো তাদের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এত বেশি নয়। তাদের পরীক্ষা হয়তো আস্তে আস্তে নিয়ে নিতে পারব। শিক্ষার্থীরা যেন এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে থাকে। দুই মাস পর পরীক্ষা নিলে যেন না বলে, প্রস্তুতি নিতে পারিনি। তাদের এখন প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা চেষ্টা করব, তাদের পরীক্ষা নিয়ে নিতে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করব পরীক্ষা নিয়ে নিতে।’
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘করোনার শুরুর পর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ ছুটি চলছে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার অনুশীলন করতে হবে। যেহেতু একটি প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষাথী সংখ্যা সুনির্দিষ্ট। পরীক্ষার মাধ্যমেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসার অনুশীলন শুরু করতে হবে। বিদ্যালয়গুলোতে যাতে এখন থেকেই শুরু হয়, সেটি বিবেচনার প্রয়োজন আছে।’
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কয়েক দফা বাড়িয়ে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি রয়েছে। আজ সেই ছুটি আরেক দফা বাড়িয়ে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত করেছে সরকার।
করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষাও। এর পরিবর্তে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলের গড়ের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে।