মোর্শেদ খানকে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে ঢাবিতে সাদা দলের মানববন্ধন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানকে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধন করে তারা। এ সময় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক মামুন আহমেদ, অধ্যাপক কালাম সরকার, অধ্যাপক আবদুস সালাম, অধ্যাপক সিরজুল ইসলাম, অধ্যাপক হাসানুজ্জামান প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানকে চাকরিতে পুনর্বহাল করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানান।
মানববন্ধনে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘ঢাবি স্বাধীন মতপ্রকাশ ও মুক্তবুদ্ধির লালন ও চর্চার কেন্দ্র হিসেবে সুপরিচিত। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য। কিন্তু আমরা হতাশা ও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সুমহান ঐতিহ্য নস্যাৎ হতে চলেছে।’
ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম আরো বলেন, ‘ড. মোর্শেদ হাসান খান মার্কেটিং বিভাগের একজন অধ্যাপক। একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত তাঁর একটি নিবন্ধের সূত্রধরে উদ্ভূত প্রতিক্রিয়া ও পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনিক ট্রাইবুন্যাল গঠন করা হয়। আমরা জানতে পেরেছি যে, ট্রাইবুন্যাল প্রথমে তাঁর বিরুদ্ধে একটি শাস্তির সুপারিশ করেছিল। কিন্তু একটি মহল এটি জানতে পেরে ট্রাইবুনালের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার জন্য সংবাদ প্রকাশের ব্যবস্থা করে এবং ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলও করে। একটি পরিস্থিতি তৈরি করে ট্রাইবুনালের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের মাধ্যমে গত ৯ সেপ্টেম্বর সিন্ডিকেট সভায় অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।’
লিখিত বক্তব্যে ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম আরো বলেন, ‘১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশের ৫৬ ধারার-৩ উপধারা এবং ১ম স্ট্যাটিউটের ৪৫ ধারার ৩ উপধারা অনুযায়ী নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ, অদক্ষতা এবং চাকরিবিধি পরিপন্থী কাজের সাথে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া যায়। অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান উপরিউক্ত কোনো অভিযোগে অভিযুক্ত নন।’
বাংলাদেশের সর্বত্র ভিন্ন মতের মানুষের প্রতি নিপীড়ন, নির্যাতন চলছে অভিযোগ করে ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কেউ রেহাই পাচ্ছেন না। ভিন্নমতের বক্তব্য কেবল পাল্টা বক্তব্য দিয়েই খণ্ডন করা উচিত। কিন্তু সরকার জবাব দেয় হামলা, মামলা, খুন, গুম ও ধর্ষণের মাধ্যমে।’ লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয় ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ দিয়ে। এর ৫৬ ধারার ২ উপধারা অনুযায়ী যেকোনো শিক্ষক বা কর্মকর্তা রাজনীতি করার তথা স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার রাখেন। নিবন্ধটি প্রত্যাহার, দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা সত্ত্বেও তাঁকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন ও ন্যক্কারজনক। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত চাকরিবিধিরও সুস্পষ্ট ব্যত্যয়।’