মাঠে না যাওয়ায় জাবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ
নির্দেশ মতো খেলার মাঠে না যাওয়ায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রথম বর্ষের (৪৮ ব্যাচ) ইব্রাহীম খলিল নামের এক শিক্ষার্থীকে হলের গেস্টরুমে ডেকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের এক কর্মীর বিরুদ্ধে।
আজ বুধবার বিকেল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলে মারধরের এ ঘটনা ঘটে।
যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই ছাত্রলীগকর্মী ফাহিম ফয়সাল সরকার রাজনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (৪৭ ব্যাচ) শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানার অনুসারী।
মারধরের শিকার ইব্রাহিম খলিল বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। ঘটনার বিচার দাবি করে তিনি প্রক্টর ও সংশ্লিষ্ট আবাসিক হলের প্রভোস্টের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ‘বিকেল সাড়ে ৩টায় ফাহিম ফয়সাল ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে খেলার মাঠে না যাওয়ার কারণে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। হলের গেস্টরুম ও হলগেটের সামনে মারধর করেন। এ ছাড়া জোর করে গেস্টরুম পরিষ্কার করাতে বাধ্য করেন। তার নির্দেশ মানতে বাধ্য করেন।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইব্রাহিম খলিল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি অসুস্থ। বিভাগে টিউটরিয়াল পরীক্ষা শেষ করে হলে ফেরার পর পরই সিনিয়ররা আমাকে গেস্টরুমে ডাকেন। সেখানে গেলে খেলার জন্য টাকা চান এবং খেলার মাঠে যাওয়ার নির্দেশ দেন। আমি অসুস্থ থাকায় মাঠে যেতে অসম্মতি জানালে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করেন।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও হল প্রভোস্ট আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘মারধরের বিষয়টি আমি শুনেছি। আমি ক্যাম্পাসের বাইরে থাকায় হলের ওয়ার্ডেনকে জানিয়েছি। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, ‘আমি ব্যাপারটা শুনেছি। বিষয়টি দেখতেছি।’
মারধরের বিষয়ে ছাত্রলীগকর্মী ফাহিম ফয়সাল বলেন, ‘ঘটনার বর্ণনার সঙ্গে মূল ঘটনার মিল নেই। হলের ছোট ভাই হিসেবে আমি তাঁকে খেলার মাঠে থাকতে বলি। কিন্তু সে আমার সঙ্গে খুব রূঢ় আচরণ করে বসে, তাই তাঁর সঙ্গে কিছু কথা-কাটাকাটি হয়।’
এ বিষয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আরমানুল ইসলাম খান বলেন, ‘নবীনদের আগমনের আগে এমন ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং আতঙ্ক উসকে দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন র্যাগিং নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার ফলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।’
গত বছর ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু হওয়ার পর পরই প্রশাসন র্যাগিংবিরোধী নানা কর্মসূচি পালন করে। এর মধ্যে ছিল র্যাগিংবিরোধী শোভাযাত্রা, লিফলেট বিতরণ, বিভাগ ও অনুষদভিত্তিক র্যাগিংবিরোধী কমিটি, হলের আবাসিক শিক্ষকদের নিয়মিত তত্ত্বাবধান। র্যাগিংয়ের অভিযোগে বহিষ্কারও করা হয় দুই বিভাগের প্রায় ১৫ জন শিক্ষার্থীকে। এত পদক্ষেপের পরও র্যাগিং আতঙ্ক এখনো কাটেনি। আগামী ১০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরুর কথা রয়েছে।