জাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে কনসার্টের ঘোষণা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) বন্ধের তৃতীয় দিনে উপাচার্য ফারজানা ইসলামের বাসভবনের সামনে কনসার্টের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার রাতে আন্দোলনকারীদের পক্ষে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক মুশফিক উস সালেহীন। এ ছাড়া আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংহতি সমাবেশের ডাক দেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এদিকে উপাচার্য ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে আন্দোলনের মুখে জোরদার করা হয়েছে উপাচার্যের বাসভবনের নিরাপত্তা। এ ছাড়া বাড়ানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা। ক্যাম্পাসজুড়ে বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি।
এদিকে, আন্দোলন ঠেকাতে আরো কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি ও শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার কারণে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তেই হবে। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে দিতে প্রয়োজনে পুলিশ ব্যবহার করা হবে।’
পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল ও কোনো অফিস বা আবাসিক এলাকায় শিক্ষার্থীদের অবস্থানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া জাবির বটতলা এলাকায় সব খাবারের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এ অবস্থায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা হল ছেড়ে গেলেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র জাবির দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘আমরা আমাদের ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে যাব। প্রয়োজনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের থাকার বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি উন্নয়ন প্রকল্পের দরপত্র ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এরপর ‘ঈদ সেলামির’ নামে ছাত্রলীগের দুই কোটি টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠলে তিন দফা দাবিতে গত ২৩ আগস্ট থেকে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।
কয়েক দিন আন্দোলন চলার পর গত ১২ সেপ্টেম্বর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওই আলোচনায় আন্দোলনকারীদের দুটি দাবি মেনে নিলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রকল্পের টাকা নিয়ে দুর্নীতির তদন্তের দাবি পূরণ করেনি বলে অভিযোগ ওঠে। এর পর ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়।