গোপনে পাবিপ্রবি ভিসির পাবনা ত্যাগ, শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পদত্যাগের একদফা দাবিতে আজ সোমবারও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। আজ সকাল থেকে সপ্তম দিনের মতো ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে তারা অবস্থান নেয়।
এদিকে উদ্ভুদ সংকট সমাধান ও শিক্ষার পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সিমিতি। বিশ্ববিদ্যালয়ে সংকট সমাধানে উদ্যোগ না নিয়ে রাতের অন্ধকারে ভিসি পাবনা ত্যাগ করেছেন বলে অভিযোগ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, পাবিপ্রবি উপাচার্য ড. এম রোস্তম আলীর কাছে চাকরিপ্রার্থী মনিরুলের ঘুষ ফেরত চাওয়ার অডিও ভাইরাল হয়। ওই অডিওর তদন্তসহ ১২ দফা দাবি পূরণে আন্দোলন করে আসছে তারা। কিন্তু দাবি পূরণে বেঁধে দেওয়া সময়সীমা পার হলেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এজন্য উপাচার্যসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে গত ২৯ অক্টোবর থেকে আন্দোলন শুরু করে তারা। আগামী ১৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার আগেই দাবি বাস্তবায়ন চায় শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলে, ‘আমাদের দাবি কথা আলোচনায় না বসে রোববার গভীর রাতে গোপনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলো ছেড়ে পালিয়ে গেছেন ভিসি স্যার।‘
শিক্ষার্থীরা আরো বলে, ‘এই দুর্নীতিগ্রস্ত অযোগ্য ভিসি সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন। আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো কার্যক্রম চলতে দেওয়া হবে না।’
এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে সংকট নিরসের জন্য জরুরি ভিত্তিতে প্রভোস্ট, অনুষদ ডিন, প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টাদের নিয়ে বৈঠক করে ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
কমিটির প্রধান বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট মো. সাইফুল ইসলামকে সমন্বয়ক করে তার ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা এখনো ছাত্রদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনায় বসেনি বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এদিকে একাডেমিক কার্যক্রম চালু রাখতে সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের দাবিতে গতকাল সোমবার মানববন্ধন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আয়োজনে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই কর্মসূচি পালন করে তারা।
এ সময় শিক্ষক নেতারা বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে যেন শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত না হয়। শিক্ষার্থীদের দাবি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজে বের করার আহ্বান জানান তাঁরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর ড. প্রীতম কুমার দাস বলেন, ‘সংকট নিরসনের জন্য ভিসি স্যার একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। সেই কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনায় বসে চলমান সমস্যার সমাধান করবেন। আর সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সেই কাজে ভিসি স্যার বাইরে গেছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি।’
এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ল্যান্ডফোন বাজলেও অপরপ্রান্ত থেকে রিসিভ করা হয়নি।