ইবিতে শিক্ষক-কর্মকর্তা দলাদলি, শহীদ মিনারে বিশৃঙ্খলা
ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বিশৃঙ্খলা ও বাগবিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতি থেকে সদ্য বিভক্ত পক্ষের কর্মকর্তাদের নাম মাইকে ঘোষণা করায় এ ঘটনা ঘটে। বাগবিতণ্ডার পরেই শহীদ মিনারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, একুশের প্রথম প্রহরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করে। পরে পর্যায়ক্রমে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও কর্মকর্তা সমিতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বঙ্গবন্ধু পরিষদ নির্বাচন কমিশন ও কর্মকর্তা সমিতির সদ্য বিভক্ত হওয়া সংগঠন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। এ দুই সংগঠনের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নাম ঘোষণার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় বাগবিতণ্ডা। এ সময় নির্বাচিত কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি শামসুল ইসলাম জোহা ও সাধারণ সম্পাদক মীর মোরশেদুর রহমান সঞ্চালকের ওপর চড়াও হন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সঙ্গে কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিনের বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এভাবে তর্কবিতর্ক চলে প্রায় ১০ মিনিট। এতে শহীদ মিনারে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কিন্তু বিভিন্ন বিভাগ, আবাসিক হল এবং সামাজিক, রাজনৈতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোর পর্যায়ক্রম ভেঙে যায়। এলোমেলোভাবে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে থাকে।
এ বিষয়ে কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি শামসুল ইসলাম জোহা বলেন, ‘কর্মকর্তা সমিতির গঠনতন্ত্র ভঙ্গ করে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচিত কর্মকর্তা সমিতি ব্যতিরেকে অফিসার্স অ্যাসোসিয়শনের নাম ঘোষণা করলে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি।’
বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন বলেন, ‘এটা আসলে দুঃখজনক। আমরা বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্র ঘোষিত কমিটি থেকে প্রথমে ফুল দিই। পরে কেন্দ্র ঘোষিত সংগঠন না হয়েও বঙ্গবঙ্গু পরিষদ নির্বাচন কমিশনের নাম ঘোষণা করলে আমরা এর প্রতিবাদ জানাই।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ এটি। শহীদ মিনারে হট্টগোলের ঘটনাটি দুঃখজনক। আমি বিশৃঙ্খলা না করতে সবাইকে অনুরোধ করেছিলাম।’