অবরোধ তুলে ববি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শেষে প্রায় ১০ ঘণ্টা পর সড়ক অবরোধ তুলে নিল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তবে তারা ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তাদের তিনটি দাবি বাস্তবায়ন না হলে পুনরায় আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় তারা। এর ফলে আজ বুধবার বিকেল ৫টার দিকে বরিশাল-পটুয়াখালী সড়কে যান চলাচল শুরু হয়। এর আগে সকাল ৭টা থেকে অবরোধ শুরু করে শিক্ষার্থীরা।
এর আগে আজ বিকেল ৩টার দিকে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা এবং স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা।
উপাচার্য কার্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে শিক্ষার্থীদের তুলে ধরা দাবিগুলো হচ্ছে দুই শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার পদক্ষেপ নিতে হবে, হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা করা, এবং অনাবাসিক সব শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধানে ভূমিকা নেওয়া। এর আগে বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল শিক্ষার্থীরা।
দ্বিতীয় বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন, সহকারী প্রক্টর সুপ্রভাত হালদার, শিক্ষক সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মোকতার হোসেন ও উপপুলিশ কমিশনার (ডিবি) মনজুর হোসেনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
দ্বিতীয় দফা বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি মাহমুদুল হাসান তমাল জানান, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মোকতার হোসেন বলেন, ‘আধা ঘণ্টার বৈঠকে শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল অপরাধীদের গ্রেপ্তার এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনাসহ অন্য দাবিগুলো পূরণে চেষ্টা করব।’
উপাচার্য ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, ‘আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তারা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। এর ফলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের পথ থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছে।’
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তৌফিকুল সজল ও ফারজানা আক্তার মেমি নিজ বাড়ি খুলনায় যাওয়ার জন্য রুপাতলীতে বিআরটিসি কাউন্টারে যান। সেখানে কাউন্টার স্টাফ রফিক তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে সজল ও মেমিকে মারধর ও লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ পাওয়া। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন এবং রফিককে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। পুলিশ এক ঘণ্টার মধ্যে রফিককে গ্রেপ্তার করে। এরপর রাতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।