শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ চান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরাও
দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাময়িক বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।
আজ রোববার বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ আহ্বান জানান সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের সংগঠনের কেন্দ্রীয় এই মোর্চা।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভুইয়া বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা সংবাদমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমরা আশা করি, আমাদের এ আহ্বাহে তিনি সাড়া দেবেন।’
বিষয়টি নিয়ে কারো সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে নিজামুল হক ভুইয়া বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে তিনি বিষয়টি আলোচনা করবেন। এরপর আর কিছু জানানো হয়নি।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ‘মহামারী’ ও ‘বিপর্যয়কর’ অবস্থায় রূপ নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিমানবন্দর, স্থলবন্দর, বাণিজ্যকেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ দিতে দিচ্ছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান নিজেদের কর্মীদের বাসায় বসে কাজ করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে।
যদিও বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত মোট পাঁচজন এই ভাইরাসে সংক্রামিত হয়েছেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া বেশকিছু মানুষ ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ আছেন। বিদেশ থেকে আসার যাত্রীদের পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর ক্ষেত্রবিশেষে ‘হোম কোয়ারেন্টিন’ বা সরকারি কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে।
এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অভিভাবকসহ সমাজের বেশকিছু মানুষ মনে করছে, স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া উচিত। যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয় আজ রোববারও জানিয়েছে, এ ব্যাপারে তাদের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যদি এই ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
অপরদিকে আজ সকালে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। সরকার বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এর মধ্যেই আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের পক্ষ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের আহ্বান জানানো হলো।
শিক্ষকদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে মহামারী রূপ নিয়েছে। ইতোমধ্যে ১৫০টিরও বেশি দেশে করোনাভাইরাস বিস্তার লাভ করছে। সতর্কতার অংশ হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনসমাগম এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ করা হয়েছে। এমন কী কোনো কোনো দেশে রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। করোনায় সংক্রমিত হওয়ার পর থেকে আমাদের দেশের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ব্যাপারে একটি জনমত সৃষ্টি করেছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ‘বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানসমূহ পুনর্বিন্যাস করায় প্রধানমন্ত্রীর নিকট কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’
‘এমতাবস্থায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনতিবিলম্বে বন্ধ ঘোষণা অথবা গ্রীষ্মকালীন ছুটি নির্ধারিত সময়ের পূর্বে কার্যকর করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে নির্দেশনা প্রদানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বিনীত অনুরোধ করছি’, যোগ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।