বিভাগের নাম পরিবর্তনের দাবিতে রাবিতে শিক্ষার্থীদের অনশন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের নাম ‘ফলিত পরিসংখ্যান’ করার দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছে শিক্ষর্থীরা। আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পৃথিবীর কোথাও পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট নামের কোনো বিভাগ নেই। ফলিত পরিসংখ্যানের সঙ্গে তাদের সিলেবাসের বেশির ভাগ মিল থাকা সত্ত্বেও শুধু নামের কারণে তারা চাকরির বাজারে বিভিন্নভাবে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই তারা বিভাগের নাম পরিবর্তন করে ফলিত পরিসংখ্যান করার দাবিতে অনশন করছে।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মাহাতাব উদ্দীন বলেন, ‘পপুলেশন সায়েন্স’ হচ্ছে কলা অনুষদের বিষয়। অন্যদিকে ‘হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট’ হচ্ছে কমার্সের বিষয়। অথচ দুইটি বিষয়কে একীভূত করে আমাদের বিএসসি সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বিভাগের এমন নামের কারণে চাকরি ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে বিভাগের নাম পরিবর্তন করে ‘ফলিত পরিসংখ্যান’ করার দাবিতে অনশনে যেতে বাধ্য হয়েছি।
মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মোহাজির রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং আমাদের সভাপতি স্যার বিভাগের নাম পরিবর্তনের লিখিত আশ্বাস না দেওয়া পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাব।’
এদিকে দুপুর ২টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান। এ সময় বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। অধ্যাপক লুৎফর রহমান শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি উপচার্যকে জানানোর আশ্বাস দিয়ে অনশন কর্মসূচি স্থগিত করতে বলেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ও বিভাগের সভাপতির লিখিত নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া ঘোষণা দেন। একপর্যায়ে প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছি। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বলছে, উপাচার্য স্যার ও আমার লিখিত আশ্বাস লাগবে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়টি আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। ভিসি স্যারকেও ফোন করা হয়েছে, তবে তিনি ঢাকায় মিটিংয়ে থাকায় ফোন রিসিভ করেনি।’
জানতে চাইলে প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অনশন কর্মসূচি স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা শুনেনি। বিভাগের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি আলোচনায় বসে সমাধান করতে হবে। উপাচার্য স্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে ঢাকা আছেন। তিনি এলে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করা হবে।’
গত ১৯ জানুয়ারি থেকে বিষয় কোর্ড চেয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে শিক্ষার্থীরা। তবে বর্তমানে বিভাগের নাম পরিবর্তন করে ফলিত পরিসংখ্যান করার দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা।