প্রভাষককের বিরুদ্ধে নেপালি ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক হুমায়ুন কবিরকে সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাঁর বিরুদ্ধে এক নেপালি ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগের তদন্ত চলমান থাকায় এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রভাষক হুমায়ুন কবির এর আগে বিতর্কিত উপাচার্য খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের অপসারণের দাবিতে প্রক্টরের পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন।
গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. নূরউদ্দিন আহমদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্তের আওতাধীন থাকায় যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ-সংক্রান্ত গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক বিরত রাখা হলো। এ আদেশ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।’
গত ১৩ নভেম্বর প্রভাষক হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্রার বরাবর যৌন নিপীড়নের লিখিত অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নেপালি ছাত্রী। এ বিষয়ে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলের প্রধান ও আইন বিভাগের শিক্ষক মানসুরা খানমকে প্রধান করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি গঠনের পর হুমায়ুন কবিরের সহকারী প্রক্টরের পদ স্থগিত করা হয়।
এদিকে এ অভিযোগ অস্বীকার করে আজ এক সংবাদ সম্মেলনে প্রভাষক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘গত ২১ সেপ্টেম্বর সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে সহকারী প্রক্টরের পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলাম। এ কারণে সাবেক ভিসিপন্থী কিছু শিক্ষক ষড়যন্ত্র করে এক শিক্ষার্থীর মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক। প্রাথমিক প্রতিকার হিসেবে আমি থানায় সাধারণ ডায়েরি করি।’
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কাছে ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়ে হুমায়ুন কবির বলেন, ‘পুরো ঘটনাটি আমার সম্মান ক্ষুণ্ণ করেছে। আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রের কারণে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার চরিত্র হরণের জন্য ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি করে ন্যায়বিচারের জন্য ভাইস চ্যান্সেলরের কাছে আমি দাবি জানাচ্ছি।’
হুমায়ুন আরো বলেন, ‘গত ভর্তি পরীক্ষায় প্রতারক চক্রের ১০ জন ধরা পড়ে। তাদের ধরতে এবং জেলহাজতে পাঠাতে আমিও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছি। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু ব্যক্তি ক্ষুব্ধ হয়েছে। যে কারণে এর পরদিনই আমার বিরুদ্ধে এমন একটি লিখিত স্টেটমেন্ট দেওয়া হয়েছে। আমি এর ন্যায়বিচার চাচ্ছি।’
এদিকে এই যৌন হয়রানির প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে নেপালি শিক্ষার্থীরা।