ঢাবির বাসে পরিবহন শ্রমিকদের হামলা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাসে হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে বাসে হামলাকারীদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে তারা।
আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ওই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এ সময় বক্তারা এই ঘটনায় পরিবহন শ্রমিক নেতাদের আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা না চাইলে, তাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেয় এবং ঢাবির আশপাশের গণপরিবহনের রুট বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘পরিবহন শ্রমিকরা তাদের স্বার্থে আঘাত লাগলে আন্দোলন করতে পারে। কিন্তু আন্দোলনের নামে কেন সাধারণ মানুষের মুখে কালি মেখে দেবে? কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে হামলা করা হবে? এটা কোনো আন্দোলন নয়, এটা ছিল একটা নৈরাজ্য এবং উসকানিমূলক আন্দোলন। আপনারা জানেন, পরিবহন সেক্টরকে কারাবার বার উসকে দেয়, কারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সরকারকে একটি মেসেজ দেয়, কারা শ্রমিকদের রাস্তার নামিয়ে তাদের স্বার্থ রক্ষা করে।’
ভিপি নুর বলেন, ‘রাস্তাঘাটে যে যানবাহন চলে ৬০ শতাংশ ফিটনেসবিহীন, ৪০ শতাংশ লাইসেন্সবিহীন। এখন নতুন আইনে তারা দেখতেছে তাদের ব্যবসায় লস হবে, তাদের স্বার্থে আঘাত লাগবে।তাই তারা সাধারণ মানুষকে কষ্ট দিয়ে তারা হুজুগের ওপর একটি আন্দোলন করছে। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের বাসে হামলার সময় কর্তব্যরত পুলিশ তার দায়িত্বপালন না করে ভিডিও ধারণ করেছে। এটা একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। আমরা পরিবহন সম্পাদককে বলব, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি এ বিষয়ে দায়িত্ব না নেয়, তাহলে আপনি এর বিরুদ্ধে মামলা করুন, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে আঘাত করার সাহস না পায়।’
মানববন্ধনে ডাকসুর পরিবহন সম্পাদক শামস ঈ নোমান বলেন, ‘ঢাবির বাসে হামলা মানে ঢাবির ঐতিহ্যের ওপর হামলা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীর ওপর হামলা। আমরা হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি। ধর্মঘটের নাম করে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ভাঙচুর করে তারা সন্ত্রাসী। এসব সন্ত্রাসীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’
মানববন্ধনে ডাকসুর সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসিফ তালুকদার বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যে বাস দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছিল, এটা কোনো গণপরিবহন নয়। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত করবে, এ বাসে হামলা কেন? এটা শুধু ঢাবির লাল বাসে হামলাই নয়, এটা শিক্ষার্থীদের বুকে হামলা করা হয়েছে।’
এ ছাড়া মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ডাকসুর সাহিত্য সম্পাদক মাজারুল কবির শয়ন, ডাকসুর সদস্য তিলোত্তমা সিকদার, ঢাবি ছাত্র পরিবহনের আহ্বায়ক মোবারক হোসেন প্রমুখ।
গতকাল বুধবার নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় সকাল ৭টার দিকে শিক্ষার্থীদের বহন করা ঈশা খাঁ বাস থামিয়ে চালককে মারধর করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়, ওই সময় সেখানকার কর্তব্যরত পুলিশ দায়িত্ব পালন না করে মারধরের ভিডিও ধারণ করা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। ঈশা খাঁ বাসের চালক মাসুম বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া ওয়ারী বাস ও তার চালকের গায়ে আলকাতরা মাখা হয়। এ ছাড়া টঙ্গীতে ক্ষণিকা বাস ভাঙচূর করা হয়েছে।