বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি নেই, প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করুন : গভর্নর
দেশে বৈদেশিক মুদ্রার কোনো ঘাটতি নেই উল্লেখ করে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ে এক সভা শেষে ড. মনসুর সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রায় কোনো ঘাটতি নেই, যে কেউ এলসি খুলতে পারবেন।’
বাজারে চাহিদা পূরণে প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে ড. মনসুর ব্যবসায়ীদের দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি পরামর্শ দেন, ‘এলসি খুলুন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করুন এবং বাজারের চাহিদা মেটান’।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর তার বক্তব্যে একটি মুক্তবাজার অর্থনীতিতে তার বিশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন। আস্থা প্রকাশ করেন, বাজার শক্তি বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে সহায়তা করবে। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব, তবে পরিস্থিতি শান্ত হতে সময় লাগবে।’
ড. মনসুর রেশনিং কর্মসূচি সম্প্রসারণসহ মূল্যস্ফীতি কমানোর লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি ঘোষণা করেন সরকার শিগগিরই এক কোটি সুবিধাভোগী পরিবারের প্রত্যেকের জন্য বর্তমান পাঁচ কেজি থেকে বাড়িয়ে ১০ কেজি করে প্রয়োজনীয় পণ্য বিতরণ করবে। তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমরা সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপণ্যের সহজলভ্যতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ওপেন মার্কেট সেল (ওএমএস) উদ্যোগের জন্য ট্রাকের সংখ্যা বাড়াচ্ছি।’
ড. মনসুর জোর দিয়ে বলেন, মুদ্রাস্ফীতি একটি আর্থিক বিষয় এবং এটিকে অবশ্যই কার্যকর মুদ্রানীতির মাধ্যমে পরিচালনা করতে হবে। তিনি অতিরিক্ত বাজার হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সতর্ক করেন এবং অতীতের ঘটনাগুলোও স্মরণ করিয়ে দেন। যেখানে কঠোর পদক্ষেপের ফলে পণ্যের ঘাটতি দেখা দিয়েছিল।
গভর্নর বলেন, ‘আমরা যদি খুব বেশি চাপ প্রয়োগ করি তবে পণ্যগুলো বাজার থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে। ১/১১-এর সময়কালে এবং সাম্প্রতিক ডিম সংকটের সময়ও আমরা তা দেখেছি। বরং এর পরিবর্তে, তিনি সহনশীল ও কার্যকর পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘আমরা সংলাপের মাধ্যমে চাপ দিচ্ছি, অতিরিক্ত পর্যবেক্ষণ নয়।’
বাজার নিয়ন্ত্রণে একটি পরিমিত পদ্ধতির ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি আবেগপ্রবণ সিদ্ধান্ত গ্রহণকে নিরুৎসাহিত করেন ড. মনসুর। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি ভারসাম্যপূর্ণ পদ্ধতির লক্ষ্য রাখি। এ প্রেক্ষাপটে হঠকারী সিদ্ধান্তের কোনো সুযোগ নেই। আমরা বিশ্বাস করি, পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে, এর জন্য কেবল সময়ের প্রয়োজন।’
সরবরাহ বাড়ানোর সরকারি প্রচেষ্টা স্বস্তি আনতে সহায়তা করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।