নড়াইলে পাট নিয়ে আশা-নিরাশায় চাষিরা
নড়াইলে চলতি বছর পাটের ফলন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হয়েছে। পাটের আঁশ ও পাটকাঠির দামও ভালো ছিল প্রথম দিকে। এতে চাষিদের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। কিন্তু ব্যবসায়ী ও মজুদদাররা ভালো মুনাফা করলেও চাষিদের কপালে তেমনটি জোটেনি। আর কিছু দিন ধরে পাটের দাম কমেছে। এতে পাট আবাদ নিয়ে আশা-নিরাশার দোলাচলে রয়েছেন চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নড়াইলের তিনটি উপজেলায় চলতি বছর ২০ হাজার ৩৭৪ হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে ২৩ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাট আবাদের মৌসুমে কৃষকরা সময়মতো ভালো বীজ, সার, ওষুধসহ পাট চাষের উপযুক্ত আবহাওয়া থাকায় চলতি বছর পাটের আবাদ বাড়ে। এ ক্ষেত্রে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সহযোগিতা করছে। উপজেলাগুলোতে পাটের আঁশ পচানোর জন্য ৭০০ রিবোন রেটিং বিতরণ করা হয়।
বিভিন্ন এলাকার বেশ কয়েকজন চাষি জানান, চাষিরা কষ্ট করে পাট আবাদ করলেও ব্যবসায়ীরাই মুনাফা ঘরে তোলেন। অনেক চাষিই অর্থকষ্টের কারণে আগেভাগে পাট বিক্রি করে দেন। কিছুদিন দাম ভালো থাকলেও সে সময় মুনাফা করেছেন ব্যবসায়ী ও মজুদদাররা।
নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শেখ আমিনুল হক বলেন, ‘নড়াইল জেলা কৃষিতে অগ্রসরমাণ জেলা। জেলায় এবার পাটের ব্যাপক আবাদ হয়েছে। আবহাওয়াও এবার অনুকূলে ছিল। আর পাট জাগ (আঁশের পচন) দেওয়ার জন্য জলাশয়ের ঘাটতি পড়েনি। প্রথম দিকে ১৮০০, ১৯০০ কিংবা ২০০০ টাকা করে পাটের মন বিক্রি করেছে। গত কয়েক দিন পাটের দাম তুলনামূলকভাবে একটু কম। গত সপ্তাহে ১৫৫০, ১৬০০ টাকায় পাট বিক্রি হয়েছে। সামনে হয়তো এ অবস্থা থাকবে না। আগামীতে বাড়বে বলে মনে করি।’
শেখ আমিনুল হক বলেন, ‘কৃষকরা পাট চাষে লাভবান হচ্ছেন। পাটের আঁশ ও পাটকাঠি উভয়ই বিক্রি করে তাঁরা ভালো মূল্য পাচ্ছেন। সব মিলিয়ে আমি আশা করছি নড়াইলে এ বছর যে পরিমাণ পাট আবাদ হয়েছে, আগামী বছর আরো বাড়বে।’