চামড়া বিক্রি করতে এসে কাঁদলেন জাহাঙ্গীর
পূর্বনির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে চামড়া কিনে এ বছর লোকসানে পড়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ী ও ফড়িয়ারা। তাঁদের অভিযোগ, আড়তদাররা সিন্ডিকেট করে দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তবে আড়তদাররা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে মন্দা থাকায় বেশ সতর্ক অবস্থানে থেকে চামড়া কিনতে হচ্ছে তাঁদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে প্রায় ৩০০টি চামড়া কিনে শুক্রবার মধ্যরাতে রাজধানীর পোস্তায় আসেন জাহাঙ্গীর। আজ শনিবার দুপুর ১২টার সময়ও তাঁকে ঘুরতে হয়েছে এক আড়ত থেকে অন্য আড়তে। তিনি যে দামে চামড়া কিনে এনেছেন, তার অর্ধেকেরও কম দাম বলছেন আড়তদাররা।
একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর একজনকে ফোন করে বলতে থাকেন, ‘ভাই, অর্ধেক দামও কয় না।’
জাহাঙ্গীর এনটিভিকে বলেন, ‘আমার মনে হয়, হেরা সবাই (চামড়ার আড়তদার) একজোট হইয়া রইছে। ২৮৩ পিস মাল আনছি। আমার ২৩শ টাকা কইরা মাল কিনা পড়ছে। এখন এই মাল কয় এক হাজার, আষ্টশ।’
জাহাঙ্গীরের মতো এ বছর এমন লোকসানে পড়তে হয়েছে অনেককেই।
এমনই এক ফড়িয়া চামড়া ব্যবসায়ী বলেন, ‘মাল লইয়া বইসা আছি। এখন কয় আষ্টশ টাকা। কিনাই আমাগো দুই হাজার ৫০ টাকা। আরেকজন বলেন, ‘দুই লাখ ৪৪ হাজার টাকার মাল আনছি। আমি এক লাখ ১৮ হাজার টাকার মাল বেচছি।’
তবে আড়তদাররা বলছেন, নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে চামড়া কিনে এনেছেন এসব মৌসুমি ব্যবসায়ী। যার কারণে তাঁরাও বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে চামড়া কিনতে বাধ্য হয়েছেন।
এক আড়ত মালিক বলেন, ‘আমাদেরও কথা ঠিক থাকে না। ঠিক মতো বুঝতে পারে নাই। গতবারের মতো চিন্তা করছিল, এ কারণে ওরা লস খাইছে।’
আরেক আড়ত মালিক বলেন, ‘রেট একটা বাঁইধা দিছিল। তার থেইকা হিসাবে মনে করেন ১০ টাকা বেশি ফুটে আমাদের কেনাকাটা করতে হইছে।’
আড়ত ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, যাঁরা চামড়া নিয়ে আসতে বিলম্ব করেছেন, তাঁরা চামড়ার দাম কম পেয়েছেন।
হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বারবার আমরা বলতেছি চামড়া তাড়াতাড়ি আনতে, তাড়াতাড়ি লবণ দিতে। যদি আপনি নষ্ট করে নিয়ে আসেন, এর ভাগীদার কি আমি হব নাকি? এখানে সিন্ডিকেটের কোনো কিছু না। সিন্ডিকেট যদি করতাম, কালকে ওই চাপের মধ্যেই করতাম। এত চামড়া। চুপচাপ বসে থাকতাম। অটোম্যাটিকলি পড়ে যেত।’
এ ছাড়া এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম পরিমাণ চামড়া সংগ্রহ হতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।