ব্যাংকিং খাতে অনিয়মের প্রভাব জিডিপিতে
দেশে শুধু ব্যাংকিং খাতের অদক্ষতা ও অনিয়মের কারণে বছরে জিডিপিতে ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ১ শতাংশ, যা টাকার অঙ্কে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।
এমনই তথ্য জানিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম )। তবে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া এ সংকট থেকে উত্তরণের আর কোনো পথ নেই বলে মনে করছে এই গবেষণা প্রতিষ্ঠান।
আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে সানেমের ত্রৈমাসিক অর্থনৈতিক পর্যালোচনার প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ চিত্র উঠে আসে।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যে সুবিধা ভোগ করছে, পুরোপুরি উন্নয়নশীল দেশ হয়ে গেলে সেগুলো ২০২৭ সালের পর আর থাকবে না। এতে রপ্তানি আয় বর্তমান হিসাবে ১১ শতাংশ কমে যাবে। আগামী নয় বছরে তা কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশকে আরো সক্ষমতা অর্জন করতে হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা সানেম।
অনুষ্ঠানে সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘যে মুহূর্তে এই লিস্ট থেকে বের হয়ে যাব, তখন আর কোনো কিছু করা লাগবে না। এই পুরো বিষয়টা কিন্তু অটোমেটিক্যালি আমাদের ওপর এসে চেপে যাবে। সুতরাং এই লস এবং বেনিফিটের যে একটা ব্যালান্স, এটা কিন্তু বড় একটা রিস্ক ফ্যাক্টর রয়ে গেছে। আমাদের বিষয়গুলো অর্জন করতে আমাদের আরো অনেক বেশি কাজ করতে হবে।’
ব্যাংকিং সেক্টরে অনিয়ম নিয়ে অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘যেই অনিয়মগুলো হয়েছে সেগুলোর আমরা কোনো দৃশ্যমান শাস্তি দেখছি না। যাঁরা ঋণখেলাপি, তাঁরাই নতুন করে ঋণ পাচ্ছে, নতুন করে ঋণ শিডিউল হচ্ছে। এই যে একটা পলিটিক্যাল পেট্রোনেজ হয়েছে, এই সংস্কৃতির পরিবর্তন হওয়াটা জরুরি। তাই আমরা মনে করি, ব্যাংকিং সেক্টরে ক্রাইসিস দূর করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছাটা জরুরি। এটা ছাড়া আমরা এ ক্ষেত্রে এ সংকট থেকে বের হয়ে আসতে পারব না।’
ব্যাংকিং খাতে অনাদায়ী ঋণ ৮০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। পর্যালোচনায় বলা হয়, ব্যাংকিং খাতে মানুষের আস্থা কমে যাওয়ায় বেসরকারি বিনিয়োগে প্রবৃদ্ধি কমেছে।
সংস্থাটির গবেষণা মতে, এতে বছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে, যা জিডিপির ১ শতাংশ কমিয়ে ফেলছে।
আসছে নির্বাচনকে ঘিরে বাজেট যাতে বেশি উচ্চাভিলাষী না হয়, এ ব্যাপারেও সতর্ক করেছে গবেষণা সংস্থা সানেম। সামগ্রিক অর্থনীতির কথা মাথায় রেখেই বাজেট নির্ধারণের কথা বলেন অনুষ্ঠানের বক্তারা। পাশাপাশি এ পর্যালোচনা প্রতিবেদনে সক্ষমতা অর্জনে কিছু সুপারিশের কথাও তুলে ধরা হয় ।