‘নগদ মুদ্রাভিত্তিক অর্থনীতি দুর্নীতির দিকে ধাবিত করে’
ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছেন, ‘নগদ মুদ্রাভিত্তিক অর্থনীতি করফাঁকি, কালো টাকা ও দুর্নীতির দিকে ধাবিত করে। সেই সঙ্গে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে।’
আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ভারতীয় সরকারের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উদ্যোগ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন অরুণ জেটলি। এ সময় ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিআরই এবং ভারতীয় হাইকমিশনের যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দুর্নীতিমুক্ত ও দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে নগদবিহীন লেনদেনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন ভারতীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তিনি জানান, তাঁর সরকারের নানা উদ্যোগের মাধ্যমে নগদ লেনদেন কমিয়ে আনার সুফল পেতে শুরু করেছে।
ভারতের সামষ্টিক অর্থনীতির বিশ্লেষণে অরুণ জেটলি শুরুতেই তুলে ধরেন তাঁর দেশের অর্থনীতির বড় সমস্যা অপ্রদর্শিত অর্থ। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো অর্থনীতি নগদ মুদ্রার ওপর নির্ভরশীল হয়, তখন তার অভিশাপও অর্থনীতিকে ভোগাবে। আর এই অভিশাপ থেকে রেহাই পেতে ভারতীয় অর্থমন্ত্রী গুরুত্ব দেন নগদবিহীন লেনদেনের ওপর।
কাগুজে অর্থের লেনদেন কমিয়ে আনতে তাঁর সরকার ৩০ কোটিরও বেশি ভারতীয় নাগরিকের ব্যাংক হিসাব খোলার কথা জানান তিনি। সেই সঙ্গে প্রত্যেক ভারতীয়র পরিচিতি নম্বর এবং ১০০ কোটিরও বেশি মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী তথ্য কাজে লাগিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডার।
অরুণ জেটলি বলেন, ‘নগদ লেনদেন কমাতে সরকার ৩০ কোটিরও বেশি ভারতীয় নাগরিকের ব্যাংক হিসাব খোলার উদ্যোগের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রণোদনার মাধ্যমে এগুলোকে সচল করা হয়েছে। ভবিষ্যতে নগদবিহীন এ লেনদেন ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরো গতিশীল এবং দুর্নীতিমুক্ত করবে।’
পরে ভারতীয় ভিসা ফি জমা দেওয়ার নতুন ক্যাশলেস সেবার উদ্বোধন করেন অরুণ জেটলি। এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ভিসা ফি জমা দিয়ে আবেদনপত্রটি যে কোনো ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রে জমা দেওয়া যাবে। সোনারগাঁও হোটেলের অনুষ্ঠানস্থল থেকে রাজধানীর শ্যামলী ও সিলেটের ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রে এই সেবার উদ্বোধন করা হয়। এই সেবা চালু হওয়ার কারণে ভারতে বাংলাদেশি ভিসাপ্রার্থীর সংখ্যা আরো বাড়বে বলে মনে করেন অরুণ জেটলি।
অরুণ জেটলি বলেন, ‘ভারতে প্রতিবছর ১৪ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে ভিসা দেওয়া হচ্ছে। যা বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি। বাংলাদেশিদের এ ভিসা প্রদান দুই দেশের আস্থারই বহিঃপ্রকাশ। আমি মনে করি ভিসা কার্যক্রমে এ ক্যাশলেস সেবা চালুর পর বাংলাদেশিদের মধ্যে ভিসা প্রদানের হার আরো বাড়বে।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ভারতের এক্সিম ব্যাংকের একটি শাখা অফিসেরও উদ্বোধন করা হয়।