বাংলাদেশ ব্যাংকে শুধু একটি কম্পিউটারই পোড়েনি!
বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের ১৪ তলায় অগ্নিকাণ্ডে শুধু একটি কম্পিউটার পুড়েছে-অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটির প্রধান সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস এমন দাবি করেছিলেন।
তবে আজ সোমবার দুপুরে ব্যাংকের ৩০তলা ভবনের ১৪তলায় গিয়ে দেখা যায়, বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের মহাব্যবস্থাপকের পুরো কক্ষই পুড়ে গেছে। তাঁর কক্ষের কম্পিউটার, আসবাবপত্রসহ সব কিছু পুড়ে গেছে। তাঁর কক্ষের কিছু কাগজপত্র পানিতে ভেজা অবস্থায় দেখা গেছে। শুধু তাই নয়, তাঁর ব্যক্তিগত সহকারীর কক্ষের কম্পিউটারসহ পুরো কক্ষই পুড়ে গেছে। কক্ষের বাইরের দুটি গ্লাসসহ আরেকটি কক্ষের দুটি গ্লাসও ভাঙা দেখা গেছে।
মহাব্যবস্থাপক ও তাঁর ব্যক্তিগত সহকারীর কক্ষ দুটি এখন হলুদ ফিতা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। সেখানে লোকজনকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
এর আগে গত শনিবার ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘চায়ের কেটলি থেকে শটসার্কিট হয়ে এই আগুন লেগে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। একটি কম্পিউটার ছাড়া তেমন কিছু পোড়েনি। এমনকি কক্ষের চেয়ারে থাকা তোয়ালেও অক্ষত রয়েছে। কক্ষটিতে ধোঁয়া আটকে যাওয়ায় হঠাৎ করে অনেক ধোঁয়া হয়েছিল।’
আজ বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে দেখা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে আগুন লাগার চারদিন পরও ভবনটির ছয় তলা থেকে ১৮ তলা পর্যন্ত এখনো পোড়া গন্ধ ও ছাই রয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগে দুপুর পর্যন্ত বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেটের সংযোগ দেওয়া হয়নি। এতে মুদ্রানীতি বিভাগের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী তাঁদের কাজ করতে পারেননি।
ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৫ তলায় পুরো মেঝে তিন থেকে চারবার পরিষ্কারের পরও কালো দাগ উঠানো সম্ভব হয়নি। এই মেঝেতেই রয়েছে অফ সাইট সুপারভিশন বিভাগ। বর্তমানে সেখানে শীতাতপ (এসি) সুবিধা বন্ধ রাখা হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, পুরো ভবন গ্লাস দিয়ে আবদ্ধ থাকায় আগুন লাগার পর গত চারদিনে ধোঁয়া বের হতে পারেনি। এতে ধোঁয়ার গন্ধ এখনো রয়ে গেছে। গত শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি এবং রোববার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ব্যাংকের সব কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আগুন লাগার পর আজই প্রথম ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
গত ২৩ মার্চ রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকে আগুন লাগার ঘটনা তদন্তের জন্য ওই দিন রাতেই দুটি কমিটি গঠন করা হয়। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের একটি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
ফায়ার সার্ভিসের কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কমিটিকে ২৮ মার্চের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।