বাণিজ্য মেলায় ‘আখেরি অফার’
মাত্র একদিন পরই পর্দা নামছে ২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার। এরই মধ্যে মেলার মাঠে শেষ মুহূর্তে কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। স্টলের মালামাল বিক্রি করতে শেষ মুহূর্তে ‘আখেরি অফার’ দিচ্ছেন বিক্রেতারা।
আজ মঙ্গলবার বিকেল থেকে রাত অবধি মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, শেষ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি ছাড় চলছে তৈরি পোশাক পণ্যে। স্টলভেদে ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে। মেলায় ব্লেজার-কটিতে দেওয়া হচ্ছে ‘আখেরি অফার’। এই অফারে আড়াই হাজার টাকা মূল্যের ব্লেজার কেনা যাচ্ছে মাত্র এক হাজার টাকায়। ছাড় চলছে কটি, কোট আর বিদেশি ব্লেজারেও।
ফরমাল ও ক্যাজুয়াল ব্লেজারের পাশাপাশি বিদেশি ব্লেজার ও কটিতে দেওয়া হচ্ছে ৫০ শতাংশের বেশি ছাড়। বাচ্চাদের নানা রঙ ও কারুকাজ করা এক হাজার ৫৫০ টাকার ব্লেজার পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৬০০ টাকায়, ৮০০ টাকার কটি পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৩০০ টাকায়।
মানভেদে কাশ্মীরি শাল সাধারণত বিক্রি হয় এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকায়। কিন্তু ‘আখেরি ছাড়ে’ অর্ধেক দামে বিক্রি হচ্ছে এসব কাশ্মীরি চাদর ও শাল। এ বিষয়ে ৪১ নম্বর স্টলের মালিক রবিউল আলম বলেন, ‘ভাই, শেষ মুহূর্তে বিক্রি করে যত বেশি কমাতে পারি ততই ভালো। লাভ কম করেও ছেড়ে দিতে পারি।’
এই ছাড়ের মধ্যেই দুটি কাশ্মীরি শাল কিনেছেন ফখরুল শাহীন (২৬)। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘মা আর বোনের জন্য দুটি শাল কিনেছি। শেষ মুহূর্তে দাম কিছুটা কম।’
৪০ শতাংশের উপরে ছাড় চলছে বিভিন্ন থ্রি-পিস ও টু-পিসে। ৬৫০ টাকার থ্রি-পিস এখন পাওয়া যাচ্ছে ৩৫০ টাকায়, ৫৫০ টাকার থ্রি-পিস পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ টাকায়। এ ছাড়া গোল্ডেন অফারে একটি থ্রি-পিসের দাম রাখা হচ্ছে মাত্র ৩০০ টাকা। আর একই অফারে তিনটি থ্রি-পিস কিনলে দাম রাখা হচ্ছে ৭০০ টাকা।
মেলায় আচারে পাওয়া যাচ্ছে ৫০ শতাংশের বেশি ছাড়। কাশ্মীর, ইরানের পাশাপাশি দেশি আচারেও চলছে এই ছাড়। আচার বিক্রেতারা বলছেন, শেষ মুহূর্তে কোনো পণ্য ফেরত নিতে চাই না। লাভ না হলেও মাল ছেড়ে দিতে চাই।
বিভিন্ন ধরনের ব্যাগেও দেওয়া হচ্ছে ৫০ শতাংশ ছাড়ের অফার। ভ্যানিটি, মানিব্যাগসহ বিভিন্ন ব্যাগে ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে। লেদার ও সিনথেটিকের এসব ব্যাগে রয়েছে নানা কারুকাজ। বাচ্চাদের খেলনা পাওয়া যাচ্ছে প্রায় ৫০ শতাংশ ছাড়ে। খেলনা সামগ্রীতে শেষ মুহূর্তে দেওয়া হচ্ছে এসব ছাড়।
স্টল ও প্যাভিলিয়নের দেওয়া ছাড়, অফার লুফে নিচ্ছেন ক্রেতারা। প্রতিটি স্টলেই রয়েছে ক্রেতার ভিড়। শেষ মুহূর্ত হওয়ায় ক্রেতারা দরদাম করার চেয়ে কেনাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন বেশি। অফারে ব্যাগভর্তি করে নিচ্ছেন পছন্দের পণ্য।
৩১ নম্বর স্টলের বিক্রেতা জাহিদ হোসেন বলেন, ‘মেলার প্রথম দিকে দাম কিছুটা বেশি ছিল, পছন্দের মালামাল ক্রেতারা কিনেছেন। এখন একেবারেই শেষ প্রান্তে এসেছে, তাই মালামাল আর ফেরত নিয়ে যেতে চাই না। লাভের পরিবর্তে বিক্রি করাটাই প্রাধান্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
মেলায় আগত আক্তার হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘প্রতিবছর শেষ দিকের অপেক্ষায় থাকি, এই সময়টাতে দাম খুবই কম থাকে। এবারও দাম কমেছে, কেনাকাটা করতে এসেছি। খুব ভালো লাগছে, যে দাম আশা করেছিলাম তারচেয়েও কম দামে জিনিস পাচ্ছি। আড়াই হাজার টাকার একটি ব্লেজার ছাড়ে এক হাজার টাকায় কিনেছি।’