প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি
২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এবারের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। এতে ঘাটতি ধরা হয়েছে এক লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিনের সভাপতিত্বে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদের অধিবেশন শুরু হয়। স্পিকার অনুমতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী সংসদে ২০২০-২১ সালের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন। সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে উপস্থিত ছিলেন। অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তব্যের পর সংসদের বাজেট অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করা হয়েছে।
১৯৭২ সালের স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেটের তুলনায় এবারের বাজেট পাঁচ লাখ ৬৭ হাজার ২১৪ কোটি টাকা বেশি। ১৯৭২ সালের ৩০ জুন ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ। ওই বাজেটের আকার ছিল মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকার। এর ওপর ভিত্তি করেই এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশের অর্থনীতি।
আজ অর্থমন্ত্রী ঘাটতি বাজেটের বিষয়ে তাঁর বাজেট বক্তৃতায় বলেন, বাজেট ঘাটতি দাঁড়াবে এক লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। যা জিডিপির ৬.০ শতাংশ। এটি গত বাজেটে ছিল ৫.০ শতাংশ। ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক উৎস থেকে ৮০ হাজার ১৭ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এক লাখ নয় হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করা হবে ৮৪ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য ব্যাংক বহির্ভূত খাত থেকে আসবে ২৫ হাজার কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যয় গত বছরের বাজেটের চেয়ে ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ বেশি ধরা হয়েছে। বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তিন লাখ ৭৮ হাজার তিন কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে সরকার প্রতিশ্রুত বৈদেশিক অনুদান পাবে চার হাজার ১৩ কোটি টাকা। সরকারের মোট আয় হবে তিন লাখ ৮২ হাজার ১৬ কোটি টাকা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। রাজস্ব বোর্ডের বাইরের খাত থেকে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া কর ব্যতীত রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় বাবদ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে দুই লাখ ১৫ হাজার ৪৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ রাখা হচ্ছে দুই লাখ পাঁচ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। এডিপি বহির্ভূত বিশেষ প্রকল্পে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে চার হাজার ৭২২ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত নয় এবং নিজস্ব উৎসের রাজস্ব থেকে অর্থায়নকৃত উন্নয়নমূলক কর্মসূচি তথা স্কিম বাবদ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে দুই হাজার ৫২২ কোটি টাকা। এ ছাড়া এডিপি বহির্ভূত কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি প্রকল্পে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে দুই হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা।