শিক্ষক বাবার ছয় ছেলেমেয়েই ঢাবির শিক্ষার্থী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের স্কুলশিক্ষক ছায়েদ উল্লাহর ছোট ছেলে আরফাত হোসেন। এ নিয়ে ছায়েদ উল্লাহর পরিবারের ছয় সন্তানই ঢাবিতে ভর্তি হওয়ার বিরল গৌরব অর্জন করেছেন। একই পরিবারের ছয় সন্তান দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে পড়ার এমন নজির দেশে খুব একটা দেখা যায় না।
শিক্ষক বাবা ছায়েদ উল্লাহ ও তার স্ত্রী শামীমা বেগম সন্তানদের এমন অর্জনে যেমন গর্বিত, তেমনি প্রশংসিতও হচ্ছেন এলাকায়। সন্তানদের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে গিয়ে তারা নিজেদের অনেক সম্পত্তি বিক্রি করেছেন বলেও জানান। তবে এ নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই।
ছায়েদ উল্লাহ নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার দক্ষিণ ওয়াপদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। সেখান থেকেই তিনি অবসরে যান। তিনি জানান, তার ছোট ছেলে আরাফাত ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটে ভর্তি হয়েছে। একমাত্র মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস বর্তমানে ঢাবির উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগে অধ্যয়নরত।
ছায়েদ উল্লাহর বড় ছেলে শামসুল আলম দিপু ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষে ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়ে সেখান থেকে উত্তীর্ণ হন। তিনি ৩৫তম বিসিএসে সরকারি চাকরি নেন। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে পরিচালক হিসেবে কর্মরত।
দ্বিতীয় ছেলে শাজাহান সিরাজ আল মামুন ২০১০-১১ সেশনে ঢাবির লোক প্রশাসন বিভাগে ভর্তি হন এবং প্রথম শ্রেণিতে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বর্তমানে কর্মসংস্থান ব্যাংকের হাজীগঞ্জ শাখায় সিনিয়র অফিসার।
তৃতীয় ছেলে আশরাফুল ইসলাম শহীদ ঢাবির ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি কৃষি ব্যাংকের লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক শাখায় সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত।
চতুর্থ ছেলে শরীফুল ইসলাম বিজয় ২০১৬-১৭ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক শেষ করে বর্তমানে বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ছায়েদ উল্লাহ বলেন, ‘৩০ বছর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছি। চেয়েছি সন্তানরা সুশিক্ষিত হোক। আল্লাহর অশেষ রহমতে তারা সেই লক্ষ্যে পৌঁছেছে। তাদের সাফল্যে আমি গর্বিত।’
স্থানীয় উদয়ন আদর্শ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিন বলেন, ‘শিক্ষক ছায়েদ উল্লাহর পরিবার আমাদের সমাজে আলোকবর্তিকা। তাদের কৃতিত্ব কমলনগরসহ পুরো এলাকাকে গৌরবান্বিত করেছে।’