জুলাইয়ে ভোটের কর্মপরিকল্পনা, তফসিলের আগে সংলাপ : ইসি

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পথে প্রাক-প্রস্তুতিমূলক সব ধরনের কাজ গুছিয়ে জুলাইয়ে ‘কর্মপরিকল্পনার’ মুদ্রিত কপি জনসম্মুখে প্রকাশ করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, আরপিও-আচরণবিধি, নীতিমালাসহ আইন সংস্কার, সীমানা নির্ধারণ, নতুন দলের নিবন্ধনসহ সার্বিক কাজ শেষ করে তফসিলের আগে মতবিনিময় করতে চায় সাংবিধানিক সংস্থাটি।
আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে খসড়া ‘রোডম্যাপ’ নিয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান।
অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত ডিসেম্বরের ভোটকে সামনে রেখে ইসির সব ধরনের প্রস্তুতি চলমান রয়েছে বলে জানান এই নির্বাচন কমিশনার। ভোটের পথে ইসির কাজগুলোকে ‘রোডম্যাপ’ না বলে কর্মপরিকল্পনা (অ্যাকশনপ্লান/ওয়ার্কপ্লান) হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।
ইসি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে রোডম্যাপের যে বিষয়টি, যে কর্মপরিকল্পনাটি, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে একটা নিজস্ব কর্মপরিকল্পা ধরেই এগোচ্ছি। সে কর্মপরিকল্পনার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে আসনের প্রশাসনিক বিন্যাসের তথ্য, ভোটার তালিকার তথ্য সংগ্রহ ও শেষ পর্যায়ে গুছিয়ে এনেছি, নিবন্ধনের কাজও একটা পর্যায়ে নিয়ে এসেছি। আইনের সংশোধনী পেলে মাস তিনেকের মধ্যে শেষ করতে পারব আশা করি।’
এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আগামী তিন মাসের মধ্য আমরা মোটামুটিভাবে ওয়ার্কপ্লানের প্রি-ওয়ার্ক যেটি, সেটি হয়ে যাবে। আশা রাখি, মুদ্রিত কর্মপরিকল্পনা, যেটি নির্বাচনের আগে ইসি পাবলিশ করে, জুন-জুলাইয়ের দিকে প্রিন্টেড কপি পাওয়া যাবে।’
সরকার ঘোষিত ডিসেম্বরের টাইমলাইনকে সামনে রেখে এগোচ্ছেন বলে জানান আনোয়ারুল ইসলাম।
দলের সঙ্গে সংলাপের পরিকল্পনা অগাস্ট-সেপ্টেম্বরে
নতুন দলগুলোর নিবন্ধন কাজ শেষ করে নতুন-পুরনো সবাইকে নিয়ে সংলাপে বসতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানান, এখন পর্যন্ত কয়েকটি নতুন দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। তবে তারা সময় বাড়ানোর জন্য বলেছে। এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত নিবন্ধন পেতে আগ্রহী দলগুলোর আবেদন গ্রহণ করা হবে।
সময় বাড়ানোর এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, এ বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘শিডিউল ঘোষণার পূর্বে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বসতে হবে। নতুন দল শর্তপূরণ করে আসার পরে, নতুন যারা হবে এবং পুরনো যারা আছে, তাদের নিয়েই আমরা বসব। নিবন্ধনের কাজ যদি শেষ না করি, তাহলে নতুনদের তো কষ্ট থাকবে যে, আমরা আসতে পারলাম না।’
দল নিবন্ধন শেষ করে অগাস্ট-সেপ্টেম্বর বা সম্ভব হলে আরও আগে মতবিনিময় হবে বলে জানান এ নির্বাচন কমিশনার।
বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরস্থিতির উন্নতি হয়েছে, সামনে আরও হবে বলে আশা প্রকাশ করেন ইসি আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। তিনি বলেন, ‘বাস্তবেও আমরা রমজান মাসে যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বা অতীতের তুলনায় একটা তুলনামূলক পর্যালোচনা করি, তাহলে আমি মনে করি ধারাবাহিকভাবে তা ইম্প্রুভ হচ্ছে। এটি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে আমরা নির্বাচন করতে কোনো বাধা মনে করি না। আগামী ছয় থেকে আট মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও ভালো হবে।’