রবীন্দ্রসংগীতের সুরে সুরে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সফর শেষে ঢাকা পৌঁছার পর তাঁকে বর্ণাঢ্য অভ্যর্থনা দেওয়া হয়েছে। তাঁকে বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইনসের ইকে ৫৮৬ বিমানটি আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিমান থেকে নেমে আসার পর সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ফুলের তোড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। এ সময় সেখানে সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারাও তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানান।
পরে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনের পথে রওনা হয়। তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত দীর্ঘ ১৪ কিলোমিটার পথজুড়ে নেতাকর্মীর ঢল নামে। এই পথে রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে পতাকা উড়িয়ে, ফুল ছিটিয়ে, হাত নেড়ে ও মুহুর্মুহু স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান হাজার হাজার নেতাকর্মী।
এ সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাড়িতে বসে হাত নেড়ে উপস্থিত জনতার অভিনন্দনের জবাব দেন। বিমানবন্দর থেকে গণভবনে পৌঁছাতে শেখ হাসিনার সময় লাগে প্রায় ৩০ মিনিট। সাড়ে ৭টার দিকে প্রধানমন্ত্রী গণভবনে পৌঁছান।
বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, গণভবনে পৌঁছানোর পরে প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, ক্রিকেটারসহ গুণীজনেরা। জাতিসংঘে গিয়ে দুটি সম্মানজনক পুরস্কার লাভ করায় শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী গণভবনে পৌঁছালে তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
এ সময়ে বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা সুর তোলেন- ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি, তুমি এই অপরূপ রূপে বাহির হলে জননী! ওগো মা, তোমায় দেখে দেখে আঁখি না ফিরে।’ এ সময় উপস্থিত অন্যরা তাঁর সঙ্গে খালি গলায় সুর মেলান। এরপরে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত সবার সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেন।
উত্তর আমেরিকার দেশ দুটি সফরে শেখ হাসিনা গত ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা ত্যাগ করেন। সফরের প্রথম পর্যায়ে তিনি ১৫ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর কানাডা সফর করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী ১৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে শরণার্থী ও অভিবাসন সংক্রান্ত উচ্চপর্যায়ের একটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যোগ দেন। এ সময়ে প্রধানমন্ত্রী দক্ষ রাষ্ট্র পরিচালনায় ও বহুমাত্রিক অবদানস্বরূপ জাতিসংঘ পদক ‘প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ ও ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ডে’ ভূষিত হন।
বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত ও শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য মাহবুব-উল-আলম হানিফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র, মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং পদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা।
এ দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের উত্তর পাশের ক্রিসেন্ট লেকসংলগ্ন সড়কে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, হুইপ মো. শহীদুজ্জামান সরকার, হুইপ ইকবালুর রহিম, হুইপ মো. শাহাব উদ্দিন, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদসহ সংসদ সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান।
এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ১৪-দল, সাম্যবাধী দল, আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্পটে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।