জয়পুরহাটের গুলিবিদ্ধ চেয়ারম্যানকে ঢাকায় স্থানান্তর, মামলা
দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত জয়পুরহাটের সদর উপজেলার ভাতসা ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এ কে আজাদকে (৫২) ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাতে চেয়ারম্যানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় এক পথচারীকে গুলি করা হয়। রাতেই তাদের প্রথমে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতাল এবং পরে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ায় রাতেই তাদের সেখান থেকে ঢাকায় মহাখালী মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে আহত চেয়ারম্যানের ছোট ভাই এনামুল হক বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৭-৮ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন বলে জানান জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ হোসেন। তবে মামলার তদন্তের স্বার্থে আসামিদের নাম জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
দ্বিতীয় ধাপের ভোটে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ। গতকাল শনিবার রাতে সদর উপজেলার গোপালপুর বাজারের অদূরে বুনাপাড়া এলাকায় দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে চেয়ারম্যানকে। এ সময় নয়ন চন্দ্র বর্মণ নামে স্থানীয় এক পথচারীকে গুলি করা হয়।
স্বজনরা জানান, চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ মোটরসাইকেলে করে রাত ১০টার দিকে পবিত্র মণ্ডল (২৭) নামে স্থানীয় একজনকে সঙ্গে নিয়ে ভাদসা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় সংলগ্ন দুর্গাদহ বাজার থেকে নিজ বাড়ি কোঁচকুড়ি গ্রামে ফিরছিলেন। বুনাপাড়া এলাকায় পৌঁছামাত্র মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। দুর্বৃত্তরা চেয়ারম্যান আজাদকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে সড়কের পাশের একটি পাটক্ষেতে ধরে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাঁর পেটে গুলি করে। তাঁর হাতের পাঁচটি আঙুল কেটে পড়ে যায়।
এ সময় চেয়ারম্যানের সঙ্গের আরোহী পবিত্র মণ্ডলের চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে ওই পথ দিয়ে আসা একই গ্রামের নয়ন চন্দ্র বর্মণ নামে এক পথচারী চেয়ারম্যানকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা তাঁর বুকের বাম পাশে গুলি করে পালিয়ে যায়।
ঢাকার মহাখালী মেট্রোপলিটন হাসপাতালে অবস্থান করা চেয়ারম্যান এ কে আজাদের ছোট ভাই সরোয়ার হোসেন স্বাধীন মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমার বড় ভাই আজাদ অত্যন্ত সাদামাটা ও সহজ সরল মানুষ। এলাকার মানুষদের সেবা করার জন্যই তিনি এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে হত্যার উদ্দেশ্যে সহজ-সরল মানুষটিকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে আহত করা হয়েছে।’
জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এ ধরনের অপরাধ অবশ্যই ধৃষ্ঠতাপূর্ণ কাজ। কাজেই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।