বাজার অর্থনীতি ও বিশ্বায়নের এই যুগে লোকজ সংস্কৃতি ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেন, ‘তাই সময় এসেছে লোকজ সংস্কৃতিকে পুনরুদ্ধার করার। কারণ নিজেদের ফিরে পেতে হলে আমাদের বারবার লোকজ সংস্কৃতির কাছেই ফিরে আসতে হয়।’

আজ শুক্রবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফোকলোর বিভাগ আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও অ্যালামনাই পুনর্মিলনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাশেদ খান মেনন এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশিরা এসে বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা করছে, সে ক্ষেত্রে আমাদের দেশের ফোকলোর বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের আরো এগিয়ে আসতে হবে। লোকজ সংস্কৃতি নিয়ে নতুন নতুন গবেষণায় শিক্ষার্থীদের যুক্ত করতে হবে। যাতে করে তারা বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতির ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পায়।’   

রাশেদ খান মেনন আরো বলেন, ‘পর্যটন এখন কেবলমাত্র বিনোদন বা ছুটির দিনে বেড়িয়ে আসা নয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বহুমাত্রিকতা। সেই বহুমাত্রিকতায় আমরা দেখছি সাংস্কৃতিক পর্যটন, ধর্মীয় পর্যটন, ফুড ফেস্টিভালস, কমিউনিটি ট্যুরিজম এবং একই সঙ্গে ইকো ট্যুরিজম। এই ইকো ট্যুরিজমের সঙ্গে লোকজ সংস্কৃতির যোগসূত্র রয়েছে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতির একটি অন্যতম অংশ হচ্ছে পহেলা বৈশাখ। সান্ধ্য আইন দিয়ে সেই উৎসব নিয়ন্ত্রিত হতে পারে না। বৈশাখী উৎসব কীভাবে হবে তা যখন ওলামা লীগ ঠিক করে দেয়, সেটি আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।’

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মিজানউদ্দিন বলেন, ফোকলোর প্রবাহমান একটি বিষয়। এটি এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে স্থানান্তরিত হয়। আর এর মধ্য দিয়েই লোকজ সংস্কৃতি বিকশিত হয়। নগর সংস্কৃতি লোকজ সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন নয়।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমেরিটাস বরুণ কুমার চক্রবর্তী। স্বাগত বক্তব্য দেন ফোকলোর বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোর্বারা সিদ্দিকা। এ সময় আরো বক্তব্য দেন রাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিলুফার সুলতানা, জাপানের মানবতাবাদী লেখক ও লালন গবেষক নাওমি ওয়াতানাবে।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় দুদিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন করেন রাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল খালেক। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন।