ভোলায় এনটিভির স্টাফ করেসপনডেন্ট আফজাল হোসেনের ওপর গুলিবর্ষণকারী পুলিশ সদস্যের বিচার দাবি করেছে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)।

আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে ওই দাবি জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত সদস্যরা সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধে যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের দাবি জানান।

বক্তারা সারা দেশে পেশাদার সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়ন, সাংবাদিকদের নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়নসহ ১৪ দফা দাবি তুলে ধরেন।

ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নে গত ৩১ মার্চ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সংবাদ ও ভিডিও সংগ্রহ করা শেষে বিজিবি ও পুলিশ সদস্য এবং ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে দাঁড়িয়ে নোট লেখার সময় পুলিশ কনস্টেবল জুলহাস এনটিভির স্টাফ করেসপনডেন্ট মানবাধিকারকর্মী মো. আফজাল হোসেনকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচে গুলিবিদ্ধ হয়ে আফজাল হোসেন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। গুরুতর আহত অবস্থায় সহকর্মীরা উদ্ধার করে তাঁকে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

আফজাল হোসেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের (বিএমএসএফ) ভোলা জেলা শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। ওই ফোরামের উদ্যোগে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দুই ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করা হয়।

বিএমএসএফের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস এম আবদুল মুগনী নীরো এতে সভাপতিত্ব করেন। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর, সহসভাপতি মনজুর হোসেন ঈসা, আবুল হোসেন তালুকদার ও জাহাঙ্গীর হোসেন, আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট কাওসার হোসাইন, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার দেলোয়ার জালালী ও পিনাকি দাস, সাংস্কৃতিক সম্পাদক সোনিয়া সরকার, গাজীপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ খান, সাংবাদিক বিপুল শীল, সাংবাদিক নেতা জাহাঙ্গীর খান প্রমুখ বক্তব্য দেন। বিভিন্ন সাংবাদিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত থেকে দায়ী পুলিশ সদস্যের বিচারের দাবিতে একাত্মতা প্রকাশ করেন। তাঁরা আফজাল হোসেনের উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

মানববন্ধনকালে বক্তারা বলেন, সারা দেশে যখন পেশাদার সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়ন, সাংবাদিক নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়নসহ ১৪ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সারা দেশের অবহেলিত, নিপীড়িত-নির্যাতিত সাংবাদিকদের নিয়ে মাঠে কাজ করছে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম; ঠিক তখনই দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের ওপর দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে।

বক্তারা আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমল থেকে সাংবাদিকদের ওপর দমন-পীড়ন শুরু হয়ে অদ্যাবধি তা চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর বিএমএসএফের রংপুর জেলা কমিটির সদস্যসচিব নির্ভীক সাংবাদিক মশিউর রহমান উৎসকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। গত মার্চ মাসে বিএমএসএফের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি ও সমকালের শরীয়তপুর প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম পাইলটকে জীবননাশের হুমকি দিয়ে উড়ো চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া বিএমএসএফের রাজশাহী জেলা কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসান ও দুমকি উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন, সাভারের সাংবাদিক রওশন আলীকে ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করাসহ মফস্বলে কর্মরত বিভিন্ন সাংবাদিককে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।