নোয়াখালীতে হিজবুত আর গ্রামবাসীর সংঘর্ষে নিহত ৩
নোয়াখালীতে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হিজবুত তাওহিদের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিনজনে। জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার চাষীরহাট ইউনিয়নের পোরকরা গ্রামে সোমবার বেলা ১১টায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই সংঘর্ষ চলেছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী হিজবুত তাওহিদের কর্মী ও সমর্থকদের বেশ কয়েকটি বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
নিহত তিনজন হলেন হিজবুত তাওহিদের সদস্য চাঁদপুরের কচুয়ার সোলেমান খোকন (৩৫) ও লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের ইব্রাহিম রুবেল (২৭) এবং পার্শ্ববর্তী গোদখাট্টা গ্রামের বাসিন্দা মজিবুল হক মজিব (৫৭)।
এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলে ইট-পাটকেলের আঘাতে আহত হয়েছেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. ইলিয়াছ শরীফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) এস এম আশরাফুজ্জামানসহ অন্তত ৩০ পুলিশ সদস্য। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ২০০ জন আহত হন।
ঘটনার জেরে রাত ১০টা পর্যন্ত সোনাইমুড়িতে ঢাকা-লাকসাম বাইপাস সড়কে গাছ ও ইট ফেলে অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
সর্বশেষ রাত ১০টায় পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি ওই গ্রাম থেকে হিজবুত তাওহিদের ১১০ জনকে থানায় নিয়ে আসার খবর পেয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা সোনাইমুড়ি থানায় হামলার চেষ্টা চালিয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরীফ। এ সময় পুলিশ থানা থেকে ফাঁকা গুলি ছুড়ে জনতাকে হটিয়ে দেয়।
এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে রয়েছেন।
গ্রামবাসী সড়কে আগুন দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এ ছাড়া এলাকায় অতিরিক্ত দুই প্লাটুন বিজিবি ও দুই প্লাটুন র্যাব মোতায়েন সদস্য করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কয়েক বছর থেকে পোরকলা গ্রামে নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাওহিদের কর্মীদের সঙ্গে মসজিদ নির্মাণসহ স্থানীয় মুসল্লিদের নানা বিষয়ে বিরোধ চলে আসছে। মুসল্লিদের অভিযোগ, হুমায়ুন খান পন্নীর অনুসারী হিজবুত তাওহিদের কর্মী সেলিমের নেতৃত্বে অন্য কর্মীরা এলাকায় ইসলামবিরোধী নানা রকম কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন।
সোমবার সকালে হিজবুত তাওহিদের সদস্যরা মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকায় একটি মসজিদ নির্মাণ করতে গেলে স্থানীয় গ্রামবাসী বাধা দেয় এবং এর প্রতিবাদে গ্রামবাসী মিছিল বের করে, এতে পুলিশ বাধা দেয়। তখন এক পক্ষ অপর পক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এরপর ঘটনাটি আশপাশেও ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার শেল ও শটগানের কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।