একরাম হত্যা মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একরামুল হক একরাম হত্যা মামলা আগামী ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন—বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বহালের পক্ষে মত দিয়ে আদালত বলেন, যেভাবে উপজেলার চেয়ারম্যানকে প্রকাশ্যে গুলি ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে, তা সত্যিই ভয়াবহ। আদালত অবেদনটি নিষ্পত্তি করে দিয়ে সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতে মামলাটি নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।
একই সময়ের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি না হলে আসামি জাহাঙ্গীর আলম আদিলের জামিন বিবেচনা করার জন্য বিচারিক আদালতকে বলা হয়েছে।
এ মামলায় আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খন্দকার দিলিরুজ্জামান। আসামিপক্ষে আবদুল বাসেত মজুমদার শুনানি করেন।
এই আদেশের অনুলিপি পাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালকে বিচারকাজ নিষ্পত্তি করতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খন্দকার দিলিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, একরাম হত্যা মামলার অন্যতম আসামি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির আদেলকে গত বছরের ১৬ নভেম্বর জামিন দেন হাইকোর্ট। জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত জামিন আদেশ স্থগিত করে দেন। একই সঙ্গে আবেদনটি শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ বলেন, দুই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আদিলের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটনের পরিকল্পনার অভিযোগ রয়েছে। এ জন্য হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন জানানো হয়েছে।
আইনজীবী বাসেত মজুমদার বলেন, দুজন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির মধ্যে কোনো মিল নেই। জবানবন্দিতে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য রয়েছে।
গত বছরের ২০ মে ফেনীর একাডেমি এলাকায় বিলাসী সিনেমা হলের সামনে প্রকাশ্যে গুলি করে, কুপিয়ে, গাড়িসহ পুড়িয়ে হত্যা করা হয় ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি একরামুল হককে।
নিহতের বড় ভাই রেজাউল হক জসিম ওই দিনই ফেনী জেলা তাঁতী দলের আহ্বায়ক মাহাতাব উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী মিনারের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০-৩৫ জনকে আসামি দেখিয়ে ফেনী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।