‘আমাকে টাকাও দেবেন, ভোটও দেবেন’
‘আমাকে টাকাও দেবেন, ভোটও দেবেন’-এ আবেদন নিয়েই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন একজন মেয়র পদপ্রার্থী। বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে যা কখনো দেখা যায়নি, আজ তাই দেখল সিরাজগঞ্জ পৌরসভার মানুষ। এই প্রার্থী ভোটও চাচ্ছেন, টাকাও চাচ্ছেন। তাঁকে ভোটারদের কাছে গিয়ে হাত পেতে টাকা তুলতে দেখা গেছে।
সিরাজগঞ্জে পৌরসভা নির্বাচনে বাসদের মেয়র পদপ্রার্থী নব কুমার কর্মকার এই অভিনব পন্থায় প্রচারণায় নেমেছেন। ‘ভোট দিন, আর্থিক সহায়তা করুন’-লেখা ব্যানার নিয়ে শহরের ব্যস্ততম সড়কে করেছেন পথসভা আর সভা শেষে জমায়েত হওয়া ভোটারদের কাছ থেকে নির্বাচনী ব্যয় মেটানোর জন্য হাত পেতে নিয়েছেন অর্থ সাহায্য। আর ভোটাররাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে যে যেমন পারছেন তাঁর হাতে তুলে দিয়েছেন।
নব কুমার বলেন, ‘আমি টাকাওয়ালাদের বিরুদ্ধে টাকা ছাড়া একজন প্রার্থী। আমি অংশ নিয়েছি এই কারণে, কালো টাকার মালিকদের বিরুদ্ধে কথা বলার মানুষ দরকার। আমি সে জন্য ভোটও চাচ্ছি, টাকাও চাচ্ছি। জনগণকে আমি যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছি, আপনি দুটি টাকা দিয়ে আমাকে ভোট দেন। তাহলে জনগণের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা আরো বাড়বে। সুতরাং আমাকে টাকাও দেবেন, ভোটও দেবেন।’
বাসদ মেয়র পদপ্রার্থী বলেন, ‘রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলন করি, ভূমিহীন বাস্তুহারাদের পুনর্বাসনের আন্দোলন করি। একজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে নয় কোটি টাকার দুর্নীতির মামলা রয়েছে। তাঁরা কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে। তাঁরা মেয়র হলে এই টাকা তোলার জন্য দুর্নীতি করবেন।’
এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, অন্য প্রার্থীরা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। দুপুর ২টা থেকে প্রচারণা শুরু করার কথা। কিন্তু তাঁরা সকাল ৮টায় প্রচারণা শুরু করেন।
নব কুমারের ব্যতিক্রমী প্রচারণা সম্পর্কে সাধারণ ভোটাররা বলেন, নির্বাচনে অন্য প্রার্থীরা বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করলেও এই প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় মেটানোর সামর্থ্য নেই। তবে তিনি সব সময়ই সাধারণ মানুষের পাশে থাকেন। তাঁর এই ব্যতিক্রমী জনসংযোগে অনেকেই আগ্রহী হয়ে আর্থিক সাহায্য করছেন।
একজন ভোটার বলেন, ‘আমরা কখনো নির্বাচনের জন্য ভোটারদের কাছে এমনভাবে টাকা চাইতে দেখি নাই। আমাদের ভালো লেগেছে। তাই তাঁকে আমরা টাকা দিয়েছি।’
সদর পৌরসভায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাসদ, বাসদ, জাতীয় পার্টি, এলডিপি ও বিএনপির ‘বিদ্রোহী’সহ মোট সাতজন মেয়র পদে লড়ছেন।