লরি-নসিমনের সংঘর্ষে একই পরিবারের নয়জন নিহত
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহে তেলবাহী লরির সঙ্গে যাত্রীবাহী নসিমনের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারে নয়জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৩ জন।
আজ মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের শাহজাদপুর ও উল্লাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতরা ব্যক্তিরা হলেন শাহজাদপুরের বড় মহারাজপুর গ্রামের হাচেন প্রামাণিকের স্ত্রী অজুফা বেগম (৬০), জালাল উদ্দিন (৪০), তাঁর স্ত্রী অঞ্জনা খাতুন (২৫), রেজাউল করিমের স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৩৫), তারা মিয়ার স্ত্রী রেনু খাতুন (৪০), রজব আলীর মেয়ে বন্যা খাতুন (১০), মকবুল হোসেন (৪০), পূর্ণি খাতুন (১৮) এবং নসিমসচালক আবদুস সোবহান (৪০)।
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম জানান, তেলবাহী লরিটি উত্তরবঙ্গ থেকে শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে যাচ্ছিল। অপর দিকে, শাহজাদপুর থেকে একটি যাত্রীবাহী নসিমন উল্লাপাড়া যাচ্ছিল। লরিটি গাড়াদহে পৌঁছালে সামনের চাকা ফেটে যায়। এ সময় লরিচালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে নসিমনকে চাপা দিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে যায় লরিটি। এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচজন নিহত এবং ১৬ জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থা আরো তিনজন মারা যায়। গুরুতর আহতদের মধ্যে চারজনকে বগুড়া হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান আরো একজন।
ওসি আরো জানান, দুর্ঘটনার পর থেকে লরির চালক পলাতক। তাঁকে আটকে অভিযান চলছে।
নিহত ফিরোজা বেগমের স্বামী রেজাউল জানান, তাঁর ভাইয়ের ছেলের খাতনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তাঁদের পরিবারের ২২ জন সদস্য ঢাকা যাওয়ার জন্য উল্লাপাড়া রেলস্টেশনে যাচ্ছিলেন। পথে তেলবাহী লরির সঙ্গে তাঁর স্বজনদের বহনকারী নসিমনের সংঘর্ষ হয়। এতে তাঁর পরিবারের আট সদস্য নিহত হন। আর নসিমনটি দুমড়েমুচড়ে যায়।
এ ব্যাপারে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আহমেদ জানান, ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে সবাইকে উদ্ধার করা হয়। গুরুতর আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করারও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যেই নিহতদের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক বিল্লাল হোসেন জানান, নিহতদের প্রত্যেককে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার ও তেলবাহী লরি মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।