‘নৌকার মাঝি’ পরিবর্তনের দাবিতে এমপির গাড়ি ঘেরাও
শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) নাহিম রাজ্জাকের গাড়ি আটকে ভেদরগঞ্জ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীদের সমর্থকরা।
এমপি নাহিম রাজ্জাক আজ শনিবার দলের এক বর্ধিত সভায় যোগ দিতে ভেদরগঞ্জে এলে মনোনয়নবঞ্চিত তিন মেয়র পদপ্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকরা সড়কের ওপর তাঁর গাড়ি থামিয়ে ঘিরে ধরেন। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে পড়েন নাহিম রাজ্জাক। পরে তিনি গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে ভেদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় যোগ দেন।
দলীয় সূত্র জানায়, ভেদরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান বেপারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বর্তমান মেয়র আবদুল মান্নান হাওলাদার, সহসভাপতি আবদুর জব্বার রাঢ়ী, অর্থ সম্পাদক আবুল বাশার চোকদারসহ একাধিক নেতা আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। দল থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান হাওলাদারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। ক্ষুব্ধ হয়ে আবদুল মান্নান বেপারী, আবদুর জব্বার রাঢ়ী ও আবুল বাশার চোকদার মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
আজ শনিবার বিকেলে স্থানীয় সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক ভেদরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে দলীয় এক বিশেষ বর্ধিত সভায় যোগ দিতে এলে বিদ্রোহী প্রার্থীরা ও তাঁদের সমর্থকরা এমপি নাহিম রাজ্জাকের গাড়ি গতিরোধ করে নৌকার মাঝি পরিবর্তন চাইসহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন এবং প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানান। এ সময় নির্বাচনী আচরণ বিধি উপেক্ষা করে উভয় প্রার্থীর সমর্থকরা মোটরসাইকেল মহড়া দেয় ও মিছিল করে।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুর জব্বার রাঢ়ী ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হারুন অর রশিদ বলেন, ভেদরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের জন্য স্থানীয়ভাবে তৃণমূল আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতা-কর্মী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান বেপারীর নাম প্রস্তাব করেন। প্রথমে শরীয়তপুর জেলা কমিটির কাছে এবং পরে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে নাম পাঠানো হয়। কিন্তু দলীয়ভাবে অভিযোগ উঠেছে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে মান্নান বেপারীর পরিবর্তে বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান হাওলাদারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান বেপারী বলেন, ‘শুনছি, মান্নান হাওলাদার ৭৩ লাখ টাকার বিনিময়ে কিছু অসাধু নেতার সহায়তায় দলীয় মনোনয়ন কিনে আনছেন। আমরা তাঁকে ভোট দেব না।’
এ ব্যাপারে শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অর্থের বিনিময়ে কারো কাছে মনোনয়ন বিক্রি করে না। দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতেই মেয়র মান্নান হাওলাদারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যারা এ ধরনের কথা বলেছে তারা মিথ্যা কথা বলে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করছে। নৌকার মাঝি বদলানোর কোনো সুযোগ নেই।’