দেহ ময়মনসিংহে, হাত-পা কুড়িগ্রামে : যেভাবে খুলল খুনের জট
ময়মনসিংহের চাঞ্চল্যকর বকুল হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় একই পরিবারের দুই ভাই ও ছোট বোন এবং এক ভাইয়ের স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহ পুলিশ লাইন্স হলকক্ষে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন। তিনি জানান, গ্রেপ্তার আসামিরা গতকাল মঙ্গলবার আদালতে ও পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হলেন মো. ফারুক মিয়া (২৫), তাঁর ছোট ভাই মো. হৃদয় মিয়া (২০), ফারুকের স্ত্রী মৌসুমী আক্তার (২২) ও ছোট বোন সাবিনা আক্তার (১৮)। খুন হওয়া ব্যক্তির নাম মো বকুল (২৮)। নিহত ও আসামিদের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার হুগলা গ্রামে।
পুলিশ সুপার জানান, চাঞ্চল্যকর এই মামলার রহস্য উদঘাটনে নেতৃত্ব দেন জেলা গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ কামাল আকন্দ।
গত ২০ অক্টোবর ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজের কাছে সন্দেহজনক একটি ভারী লাগেজ ট্রলি থেকে হাত-পা ও মাথাবিহীন বকুলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ছবি : এনটিভি
পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন জানান, গত ২০ অক্টোবর সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজের কাছে সন্দেহজনক একটি ভারী লাগেজ ট্রলি দেখতে পেয়ে সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পরের দিন সকালে ঢাকা থেকে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট এসে ট্রলিটি খুলে মাথা ও হাত-পাবিহীন একটি লাশ উদ্ধার করে। পরে ২২ অক্টোবর কুড়িগ্রামের রাজাপুর উপজেলায় বকুলের হাত-পা ও মাথা পাওয়া যায়। এ সময় একটি চিরকুটে পাওয়া দুটি মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে আসামিদের গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিরা গতকাল পুলিশ ও আদালতে বকুল হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া সাবিনা আক্তার দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। প্রতিবেশী ও নিহত বকুল সাবিনাকে আগে থেকেই উত্ত্যক্ত করতেন। সাবিনাকে বিয়ে দেওয়ার পরে সাবিনার শ্বশুরবাড়িতে গিয়েও তাঁকে উত্ত্যক্ত করতেন বকুল। পরে ভাইদের সঙ্গে পরামর্শ করে গাজীপুরের বানিয়াচালা এলাকায় ভাইদের ভাড়া বাসায় ডেকে নিয়ে বকুলকে হত্যার পর লাশ ব্যাগে ভরে কুড়িগ্রাম ও ময়মনসিংহে ফেলে দেয় তারা।
এ ঘটনায় গত শুক্রবার ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করে পুলিশ। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান জেলা ডিবি পুলিশের ওসি মো. শাহ কামাল আকন্দ। গত সোমবার গাজীপুর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
আজ বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহ পুলিশ লাইন্স হলকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন। ছবি : এনটিভি