বিসিসির তিন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত
বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) বাজেট কাম হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমানসহ তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বাকী দুজন হলেন বাজার সুপারিনটেনডেন্ট মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম ও ট্রেড লাইসেন্স সুপারিনটেনডেন্ট মো. আজিজুর রহমান।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার আগে এদের তিনজনকেই কর্তৃপক্ষ নিজ দপ্তর থেকে সরিয়ে প্রশাসনিক শাখায় বিশেষ কর্মে নিযুক্ত করেছিল।
এদিকে কর্তৃপক্ষের নোটিশের জবাব না দেওয়ায় দ্বিতীয়বারের মতো সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আহসান উদ্দিন রোমেলকে দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানোর নোটিশ করেছে কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, বাজেট কাম হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে নিজ পদে থাকাকালীন অর্থ দপ্তরে প্রভাব খাটিয়ে উচ্চতর স্কেল নেওয়া, বেতনের সঙ্গে তারতম্যবিহীন অর্থ আয় ও নামে-বেনামে অ্যাকাউন্ট খুলে করপোরেশনের অর্থের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে জ্ঞাত বহির্ভূত আয়ের অভিযোগও রয়েছে।
অপরদিকে, বাজার সুপারিনটেনডেন্ট মুহাম্মদ নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিজ পদে থাকাকালীন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে বিভিন্ন নামে ও বেনামে সিটি করপোরেশনের একাধিক স্টল বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া বরাদ্দবিহীন অনেক স্টল কর্তৃপক্ষের অগোচরে নিজ ইচ্ছায় জনসাধারণের কাছে ভাড়া দিয়ে টাকা আত্মসাৎ এবং অনেক গ্রাহকের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে স্টল বরাদ্দ দিয়েছেন।
এ ছাড়া ট্রেড লাইসেন্স সুপারিনটেনডেন্ট মো. আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে বাজার সুপারিনটেনডেন্ট পদে থাকাকালীন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে বিভিন্ন নামে ও বেনামে সিটি করপোরেশনের একাধিক স্টল বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। নিজ পদে (ট্রেড লাইসেন্স সুপারিনটেনডেন্ট) থাকাকালীন সহায়ক কর্মচারীকে দুর্নীতিতে উদ্বুদ্ধ করেন মো. আজিজুর রহমান। পাশাপাশি ওই অবৈধ কাজ না করা হলে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার হুমকি দেওয়াসহ গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা এনে হয়রানিও করছেন তিনি।
কর্তৃপক্ষ মনে করে এই তিনজনের কর্মকাণ্ডে সিটি করপোরেশনের ভাবমূর্তি অনেকাংশে ক্ষুণ্ণসহ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তাই তাদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে চাকরির বিধিমোতাবেক বরখাস্তকালীন তিনজনেই খোরাকিভাতা পাবেন।
এদিকে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাইল হোসেন স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ সূত্রে জানা গেছে, বরখাস্তের পাশাপাশি ওই তিনজনের বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় মামলা করা হবে না, সেইমর্মে চিঠি পাওয়ার সাত কার্যদিবসের মধ্যে কর্তৃপক্ষ বরাবর জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে জানা গেছে, সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আহসান উদ্দিন রোমেল জনসংযোগ কর্মকর্তা পদে কর্মরত না থেকে প্রশাসনিক শাখায় সংযুক্ত থাকলেও তথ্য গোপন রেখে মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে তথ্য কমিশনের শুনানিতে উপস্থিত থাকার জন্য ঢাকা যাওয়ার অফিস আদেশ স্বাক্ষর করিয়েছেন। যা কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে সম্প্রতি কেন তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ করেছিলেন। সেই নোটিশের জবাব চিঠি পাওয়ার তিন কার্যদিবসের মধ্যে দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেননি রোমেল।
এ অপরাধের কারণে কেন সাবেক এই জনসংযোগ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তার জবাব চিঠি পাওয়ার তিন কার্যদিবসের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে।
আজ সোমবার বিকেলে জনসংযোগ কর্মকর্তা বেলায়েত হাসান বাবলু এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।