ফরিদপুরে সাবেক জুনিয়র অডিটরের ১৮ বছর কারাদণ্ড
ফরিদপুরে দুদকের মামলায় রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের সাবেক জুনিয়র অডিটর মো. শামসুল হককে বিভিন্ন মেয়াদে ১৮ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া নয় লাখ ১৪ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১৩ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
আজ বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে ফরিদপুর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. মতিয়ার রহমান এ আদেশ দেন। রায়ের সময় জুনিয়র অডিটর মো. শামসুল হক আদালতে হাজির ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মো. শামসুল হক রাজবাড়ী পৌরসভার সজনকান্দা মহল্লার বাসিন্দা। তিনি ১৯৯৭ সালের ৩ এপ্রিল থেকে ২০০২ সালের ৩ মার্চ পর্যন্ত পাংশা উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে জুনিয়র অডিটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, পাংশায় উপজেলায় কর্মরত থাকা অবস্থায় শামসুল হক বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মচারীদের নামে ভুয়া জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ডের (জিপিএস) অগ্রিম বিল ও মঞ্জুরিপত্র তৈরি করে মোট আট লাখ নয় হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। পরবর্তী সময়ে ওই বিল ও মঞ্জুরিপত্র নষ্ট করে ফেলেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ফরিদপুর কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক গাজী মো. শামসুল আরেফিন ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট পাংশা থানায় নিজে বাদী হয়ে মো. শামসুল হককে আসামি করে একটি মামলা করেন। পরে তিনি নিজেই এ মামলার তদন্ত করে ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
দুদকের ওই মামলার কৌঁসুলি মো. মজিবর রহমান জানান, আদালত গতকাল মঙ্গলবার জুনিয়র অডিটর মো. শামসুল হককে অর্থ আত্মসাতের দায়ে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং আট লাখ নয় হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
জালজালিয়াতি করার দায়ে দণ্ডবিধির ৪৬৭ ধারায় পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরো তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ৮৭৭(৩) ধারায় ভুয়া হিসাব তৈরির দায়ে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
এ ছাড়া ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
কৌঁসুলি মো. মজিবর রহমান আরো জানান, তবে দণ্ডপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তি একসঙ্গে সব সাজা ভোগ করতে পারবেন। সেই হিসাবে তাকে পাঁচ বছর সশ্রম ও জরিমানা করা না করা হলে ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।