‘আ.লীগের বিরোধের জেরে’ হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দুই সভাপতি প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে বিরোধের জেরে এক ব্যক্তিকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
নিহত শাহ আলম (৪৫) উপজেলার গোহালা ইউনিয়নের উত্তর গঙ্গারামপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী মোশারফ মল্লিকের সমর্থক হিসেবে পরিচিত।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে কুমার নদের পাড় থেকে তাঁকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মুকসুদপুর উপজেলার সিন্দিয়াঘাট পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক আবুল বাসার বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর শাহ আলমের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’
মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল পাশা জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিহত শাহ আলমের চাচাতো ভাই বাবুল শেখ বলেন, ‘গত সোমবার গোহালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনের প্রস্তুতি সভায় সভাপতি পদে দুজন প্রার্থী হন। তাঁরা হলেন উত্তর গঙ্গারামপুর গ্রামের মোশারফ মল্লিক ও ইমারত হোসেন কিনু মল্লিক। তাঁদের সমর্থকদের মধ্যে আগে থেকেই বিরোধ চলে আসছিল।’
‘এই বিরোধের জেরে গতকাল মঙ্গলবার সকালে সিন্দিয়াঘাট বাজারে দুই প্রার্থীর লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে উভয় পক্ষের নারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে মোশারফ মল্লিকের চাচাতো বোন মিনাও রয়েছেন। মিনাসহ আহত চারজনকে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অন্যরা স্থানীয় ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।’
শাহ আলম তাঁর চাচাতো বোন মিনাকে দেখার জন্য গতকাল দুপুরে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন বলে জানান বাবুল শেখ। তিনি আরো জানান, এর পর থেকেই শাহ আলম নিখোঁজ ছিলেন। সারা দিন খোঁজাখুঁজি করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
বাবুল শেখ আরো বলেন, এলাকাবাসী সন্ধ্যা ৭টার দিকে হাত-পা বাঁধা অব্স্থায় শাহ আলমকে কুমার নদের পাড়ে পড়ে থাকতে দেখে। পরে তাঁরা তাঁকে উদ্ধার করে রাত ৮টার দিকে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রদীপ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, হাসপাতালে আনার অনেক আগেই শাহ আলমের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তিনি মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেননি।
এদিকে শাহ আলমের চাচাতো বোন মিনা এই হত্যাকাণ্ডের জন্য প্রতিপক্ষ সভাপতি পদপ্রার্থী ইমারত হোসেন কিনু মল্লিকের সমর্থকদের দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘তাঁরা আমার ভাইকে হাত-পা বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’