সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাচন : প্রচার তুঙ্গে, ভোট ইভিএমে
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচারের শেষ দিন ছিল গতকাল শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত। এ দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ব্যাপক প্রচার চালিয়েছেন। প্রার্থীরা ভোটারের কাছে গিয়ে উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজেদের প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করছেন।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে এই নির্বাচনের প্রচার শুরু হয়। আগামীকাল সোমবার এ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ শুধু চেয়ারম্যান পদে তাদের প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। কিন্তু ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কাউকে মনোনয়ন দেয়নি, উন্মুক্ত রেখেছে। অন্যদিকে বিএনপির চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তিনটি পদেই তাদের প্রার্থী দিয়েছে।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের এম এ মোতালেব (নৌকা), বিএনপি মনোনীত আবদুল গফ্ফার চৌধুরী (ধানের শীষ) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোনায়েম মুন্না চৌধুরী (মোটরসাইকেল)।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন মোহাম্মদ শাহজাহান (তালা), সালাহ উদ্দিন হাসান চৌধুরী (বই), মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন (চশমা), বশির উদ্দিন আহমদ (ধানের শীষ), আছিফুর রহমান সিকদার (মাইক) ও ওমর ফারুক লিটন (নলকূপ)।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলেন তারান্নুম আয়েশা (প্রজাপতি), আনজুমান আরা বেগম (কলসি) ও জান্নাতুন নাঈম রিকু (ধানের শীষ)।
সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৮৩ হাজার ৩৮০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫০ হাজার ২৮৬ এবং নারী ভোটার এক লাখ ৩৩ হাজার ৯৪। ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ১২৫টি কেন্দ্রে ৭০১টি বুথে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে ১২৫টি কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন বলেন, ‘আমরা নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) দ্বারা সব কেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।’
তবে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচনে প্রচার ব্যাপক হলেও একটি অংশের মধ্যে ভোট নিয়ে অনীহা রয়েছে। তাঁরা মনে করেন, ভোট সুষ্ঠু হবে কি না আর তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারবেন কি না? এ ছাড়া এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর শক্ত অবস্থান রয়েছে। কিন্তু নির্বাচনে জামায়াতের কোনো প্রার্থী নেই। ফলে জামায়াত সমর্থিত ভোটারদের এই নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ কম।
নির্বাচনের প্রচারের শেষ দিনে গতকাল শনিবার দুপুরে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উপজেলার কেরানীহাটের বান্দরবান সড়ক, পুরানগড়, নলুয়া, আমিলাইশ ও চরতী এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমদ আঙ্গুর, উত্তর সাতকানিয়া যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, বঙ্গবন্ধু পরিষদ সাতকানিয়া শাখার সভাপতি শফিকুর রহমান। অন্যদিকে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান ও ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমানের নেতৃত্বে উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে পথসভা ও গণসংযোগ করা হয়।
শেষ দিনে উপজেলার খাগরিয়া ইউনিয়নে গণসংযোগ করেছেন বিএনপির প্রার্থী আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। এ সময় সাতকানিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক শেখ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, বিএনপির সিনিয়র নেতা নুরুল কবির, পৌর বিএনপির সভাপতি হাজি রফিকুল আলম, উপজেলা যুবদলের সভাপতি শেফায়েত উল্লাহ চক্ষু, সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হকসহ দলের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।