‘সম্রাট ভালো আছেন, বিদেশে নিতে হবে না’
সদ্য বহিষ্কৃত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ভালো আছেন। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ।
আজ বুধবার দুপুরে মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. মহসিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সম্রাটের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। গতকাল মঙ্গলবার তাঁকে ভর্তির পর থেকে এ পর্যন্ত যতগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে সবগুলো রিপোর্টই ভালো এসেছে।'
ডা. মহসিন বলেন, সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা মিলিয়ে বর্তমানে সম্রাট ভালো আছেন। তবে গত রাতে তাঁর হৃদস্পন্দন অনিয়মিত ছিল। তাই তাঁকে আরো ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সম্রাটের কোনো ঝুঁকি নেই এবং তাঁকে বিদেশে নেওয়ারও প্রয়োজন নেই।
জানা যায়, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে গতকাল মঙ্গলবার সকালে সম্রাটকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে ঢামেকের নতুন ভবনের তিনতলায় হৃদরোগ বিভাগে নিয়ে যেতে বলেন। পরে সেখানকার চিকিৎসকদের নির্দেশনায় তাঁকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়।
গত রোববার ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামে স্টার লাইন পরিবহনের মুনীর হোসেন চৌধুরীর বাসা থেকে সম্রাট ও তাঁর সহযোগী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক আরমানকে আটক করে র্যাব। পরে তাঁদের ঢাকায় এনে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যাব। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁকে নিয়ে অভিযানে বের হয় র্যাব।
রাজধানীর কাকরাইলে ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে তালা ভেঙে সম্রাটের কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে অভিযান চালায় র্যাবের একটি দল। সেখানে অবৈধ পিস্তল, গুলি, ক্যাঙ্গারুর দুটি চামড়া, ১৬ বোতল বিদেশি মদ, এক হাজার ১৬০ পিস ইয়াবা, নির্যাতন করার জন্য বৈদ্যুতিক শক দেওয়ার যন্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য পাওয়া যায়। একই সময় সম্রাটের মহাখালী ও শান্তিনগরের ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় র্যাব।
পরে কাকরাইলের নিজ কার্যালয়ে ক্যাঙ্গারুর চামড়া রাখার দায়ে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে সম্রাটকে ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। র্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম এই আদেশ দেন। পরে সম্রাটকে কেরাণীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
এ ছাড়া মাতাল অবস্থায় গ্রেপ্তার হওয়ায় এনামুল হক আরমানকে ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। রাতে তাঁকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে আজ সম্রাটের বিরুদ্ধে রমনা থানায় দায়ের করা পৃথক দুই মামলায় ১০ দিন করে ২০ দিন রিমান্ডের আবেদনের ওপর শুনানি ছিল। সম্রাট অসুস্থ থাকায় তাঁকে আজ হাজিরা করা হয়নি। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরাফুজ্জামান আনসারী রিমান্ড শুনানির জন্য আগামী ১৫ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করেন।