দলের পরিচয়ে অপরাধ করলে ব্যবস্থা : ওবায়দুল কাদের
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘দলের পরিচয়ে যারা অপরাধ করবে, তাদের বিরুদ্ধে আগেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, ভবিষ্যতেও নেওয়া হবে।’
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন অপকর্মের দায় দল নেবে কি না— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দলের পরিচয় ভাঙিয়ে কারা অপকর্ম করছে, সেটা বড় বিষয় নয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সেই অপকর্মকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন কি না।’
সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কে অপকর্ম করছে, সেটা জরুরি নয়, অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি না, সেটাই সবচেয়ে জরুরি।’
ওবায়দুল কাদের দাবি করেন, আওয়ামী লীগ প্রতিনিয়ত দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে যাচ্ছে, যেটা এর আগে কোনো সরকারের সময়ে দেখা যায়নি। বিএনপির আমলে বুয়েটে সংঘটিত সনি হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার হয়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযান কোনো চমক নয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই অভিযান চলবে।’
গত রোববার রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বীকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন আবরারের বাবা মো. বরকত উল্লাহ। গতকাল রাতেই বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১১ জনকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় গতকাল সোমবার ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলা তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ আজ দুপুরে ওই ১০ আসামিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড মঞ্জুর করা আসামিরা হলেন বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, দ্বিতীয় বর্ষ), সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, দ্বিতীয় বর্ষ), সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, চতুর্থ বর্ষ), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, চতুর্থ বর্ষ), ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, চতুর্থ বর্ষ), উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল (বায়ো মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং, তৃতীয় বর্ষ), সদস্য মুনতাসির আল জেমি (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, দ্বিতীয় বর্ষ), মো. মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ (ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, তৃতীয় বর্ষ) এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির ও একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না।
এর আগে আজ মামলাটি চকবাজার থানা থেকে তদন্তের জন্য ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে চকবাজার জোনের সহকারী কমিশনার সিরাজুল ইসলাম এ তথ্য জানান। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরো কারা জড়িত তা খুব শিগগিরই খুঁজে বের করা হবে বলেও জানান তিনি।