কাউন্সিলে দেখে দেখে লোক নির্বাচন করব : পাপন
বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপি বলেন, ‘অনেক নতুন নতুন নেতার জন্ম হবে। তবে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে যেন ত্যাগী নেতারা বঞ্চিত না হন। সারা জীবন আওয়ামী লীগ করে এসেছে, তাদের মূল্যায়ন হয় না। দেখা যায় নতুন নতুন নেতা কোত্থেকে এসে জুটেছে। আমরা এমন নেতা চাই, এমন কর্মী চাই, যারা দেশকে ভালোবাসে। চুরি করা, লুটপাট করা লোকের আমাদের দোড়গোড়ায় ঠাঁই নাই। সামনে কাউন্সিল। এবার আমরা দেখে দেখে লোক নির্বাচন করব।’
আজ সোমবার সন্ধ্যায় ভৈরবে সেতু উদ্বোধন শেষে আয়োজিত এক জনসভায় এসব কথা বলেন বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
পাপন ভৈরবের কালী নদীর ওপর ভৈরব-কুলিয়ারচর সংযোগে ‘প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান সেতু’র উদ্বোধন শেষে আয়োজিত ওই জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
নাজমুল হাসান পাপন আরো বলেন, ‘বাবার তিনটি ইচ্ছে ছিল। ভৈরব শহর রক্ষাবাঁধ, আগানগরের লুন্দিয়ার শীতলপাটি ব্রিজ আর এই কালী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ। আজ বাবার শেষ ইচ্ছাটি পূরণ হওয়ায় আমি খুশি।’
ভৈরব উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের মানিকদী এলাকায় কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন ভৈরব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মো. সায়দুল্লাহ মিয়া।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সুশংকর আচার্য্য, কুলিয়ারচর গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান আলহাজ মুছা মিয়া সিআইপি ও বেক্সিমকো ফার্মার পরিচালক মিসেস রোকসানা পাপন।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা ফারজানা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম সেন্টু, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম বাকীবিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভ, গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, আলহাজ গোলাম সারোয়ার গোলাপ।
কালী নদীর উপর নির্মিত ভৈরব-কুলিয়ারচর সংযোগ সেতুটি বাস্তবায়ন করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। ৫২০ দশমিক ৬০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ফুটপাতসহ ৯ দশমিক ৮ মিটার প্রস্থের সেতুটি ৭১ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। প্রায় দুই বছর সময়কালের মধ্যে সেতুটি নির্মাণ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। আজ সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
কিশোরগঞ্জের ভৈরব ও কুলিয়ারচর উপজেলার মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া কালী নদী যুগ-যুগান্তর ধরে ওই অঞ্চলের মানুষের সহজ যোগাযোগে চরম প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রেখেছিল। ফলে ভৈরবের গজারিয়া ও সাদেকপুর ইউনিয়নের একাংশের মানুষ অনেক কষ্টকে সঙ্গী করে প্রতিদিনের জীবন যাপন করছিল। তাই দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই এই অঞ্চলের জনপ্রতিনিধি, সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম জিল্লুর রহমানের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন এক সময়। কিন্তু বাস্তবায়নটা তিনি করে যেতে পারেননি।
তবে বাবার সেই প্রতিশ্রতি রক্ষায় বর্তমান সাংসদ নাজমুল হাসান পাপন উদ্যোগী হোন। ফলে তৈরি হয়েছে সেতুটি। তাই আনন্দের স্রোতধারা যেন বয়ে যাচ্ছে আজ সেখানকার মানুষদের মধ্যে।
এটি বাস্তবায়িত হওয়ায় এ অঞ্চলের সহজ যোগাযোগসহ শিক্ষা, চিকিৎসা ও কৃষি অর্থনীতির ব্যাপক উন্নয়ন হবে বলে স্থানীয়দের ধারণা।