‘যার ৬ দিনে হয় না তার ৯ দিনেও হবে না’
রাজধানীর কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ক্লাবের সভাপতি শফিকুল আলম ওরফে ফিরোজকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ফের তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মো. নোমান এ আদেশ দেন।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার মুন্সি কামরুল জানান, আজ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব ২-এর উপপরিদর্শক (এসআই) জসিম উদ্দিন খান আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মুন্সি কামরুল বলেন, রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামি খুবই চালাক প্রকৃতির। তিনি রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করে আসছেন মর্মে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্র, গুলি ও মাদক ব্যবসাসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে আসছেন। মামলার প্রাথমিক তদন্তে এ আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের স্বপক্ষে যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামির সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না কিংবা অস্ত্র মামলায় উদ্ধারকৃত আলামত সম্পর্কে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। তা ছাড়া আসামি দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। মাদকদ্রব্য তিনি কাদের মাধ্যমে নিয়ে আসেন এবং বিক্রি করেন, তা জানার জন্য, ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য রিমান্ড প্রয়োজন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আসামির কাছে আরো মাদকদ্রব্য আছে কি না, তা উদ্ধারের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে শুনানি করা হয়েছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মাসুদ এ চৌধুরী শুনানিতে বলেন, মাননীয় আদালত অস্ত্র ও মাদক মামলায় প্রথমে আসামি শফিকুলকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে অস্ত্র মামলায় পাঁচ দিন, এরপর আবার মাদক মামলায় রিমান্ড আবেদন। মাদক ও অস্ত্র মামলায় আলাদা আলাদা রিমান্ড কেন? একসাথে জিজ্ঞাসা করা যায় না? এর আগে ১৭ দিন আসামি থানা কাস্টডিতে আছেন। প্রবাদে আছে, যা ছয় দিনে হয় না তার নয় দিনেও হবে না। ১৬ দিনে জানতে পারেননি, পারবেন না। আসামি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত।
শুনানিতে মাসুদ এ চৌধুরী বলেন, আসামির শারীরিক এবং মানসিক রেস্টের প্রয়োজন আছে। এভাবে যদি তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া হয় তাহলে তো তিনিই মারা যাবেন। তথ্য উদঘাটন হবে কেমনে? জানার প্রয়োজন হলে তাঁকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।
গত ২১ সেপ্টেম্বর আদালত দুই মামলায় শফিকুল আলম ওরফে ফিরোজের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর অস্ত্র আইনের মামলায় তাঁকে আবারও পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত।
২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ক্লাবে অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানের পর ক্লাবটির সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফিরোজ কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
অভিযানের পর র্যাব জানিয়েছে, কলাবাগান ক্লাবে একটি বিদেশি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া জুয়া খেলার কয়েন ও তাস উদ্ধার করা হয়েছে।