বৃষ্টি মাথায় টিসিবির পেঁয়াজের জন্য অপেক্ষা
বেলা ১১টা। রাজধানীর খামারবাড়ি এলাকায় দুটি দীর্ঘ লাইন। এক লাইনে নারীরা দাঁড়ানো, অন্য লাইনে পুরুষ। বৃষ্টির মধ্যেই দাঁড়িয়ে আছেন সবাই। কারো মাথায় ছাতা, কারো গায়ে রেইনকোট। তাঁরা সবাই দাঁড়িয়ে আছেন রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পেঁয়াজের জন্য। টিসিবির ট্রাকে করে এ জায়গা থেকে সকাল ১০টায় পেঁয়াজ বিক্রির কথা থাকলেও তখনো শুরু হয়নি।
অস্থিতিশীল হয়ে যাওয়া পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে টিসিবি। বাজারে যেখানে পেঁয়াজের মূল্য ১০০ থেকে ১২০ টাকা, টিসিবি সেখানে প্রতি কেজি ৪৫ টাকা মূল্যে বিক্রি করছে। প্রতিদিন টিসিবির ট্রাকে করে বিক্রি করা হচ্ছে পেঁয়াজ।
রাকিব হাসান নামে আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক কর্মচারী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সকাল ৮টা থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে আছি পেঁয়াজের জন্য। সকাল ১০টায় গাড়ি আসার কথা থাকলেও এখনো আসেনি।’
খামারবাড়ির একজন কর্মচারী বলেন, ‘পেঁয়াজের জন্য লাইনে দাঁড়ালাম, টিসিবির গাড়ি আসার কথা ১০টায়। এখন ১১টা বাজলেও গাড়ি আসেনি।’
নুসরাত নামের এক নারী বলেন, ‘বাচ্চারে কোচিংয়ে দিয়া দাঁড়ায়া আছি পেঁয়াজের জন্য। কিন্ত গাড়ি তো এখনো আসেনি। বাচ্চারে নেওয়ার সময় হয়ে গেছে।’
মহিউদ্দিন মিয়া নামে লাইনে দাঁড়ানো এক ব্যক্তি বলেন, ‘সবই কপাল। পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। সরকার আমাগো জন্য কম দামে পেঁয়াজ বিক্রির ব্যবস্থা করছে। কিন্তু এখন দেখেন, বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি। গাড়ি আসেনি এখনো।’
টিসিবি ট্রাকে করে আটা, ডাল, চাল, তেল ও পেঁয়াজ বিক্রি করে থাকলেও বর্তমানে পেঁয়াজের কাস্টমারই বেশি। টিসিবির প্রতিটি ট্রাক প্রতিদিন ৪০০ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করে। জনপ্রতি দুই কেজি করে দেওয়া হয়।
পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ১ অক্টোবর থেকে টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে সরকার। গত সোমবার সচিবালয়ে বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ মুহূর্তে সরকারের কাছে যথেষ্ট পেঁয়াজ মজুদ আছে। দাম বৃদ্ধি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
সচিব আরো বলেছেন, ‘যত দিন বাজারে পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল না হবে, তত দিন ট্রাকে করে বিক্রি করবে টিসিবি।’