পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক হয়ে আসছে, দাবি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের
বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপের ফলে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে দাম স্বাভাবিক হয়ে আসছে। আজ মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে এলসি মার্জিন এবং সুদের হার হ্রাস করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক পদক্ষেপ নিয়েছে। স্থল ও নৌবন্দরগুলোতে আমদানিকৃত পেঁয়াজ দ্রুত ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খালাসের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বিষয়টি মন্ত্রণালয় তদারকি করছে। সে মোতাবেক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমদানিকৃত পেঁয়াজ খালাস করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন হাট-বাজারে পেঁয়াজ দ্রুত ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পৌঁছানোর জন্য সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, ভোমড়া, সোনা মসজিদ, হিলি ও বেনাপোল স্থলবন্দরে পেঁয়াজ আমদানি নির্বিঘ্ন করতে সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি মনিটরিংয়ের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের ১০ জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আজ মঙ্গলবার থেকে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, যশোর, দিনাজপুর, পাবনা, সাতক্ষীরা, সিরাজগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলার বাজারগুলোতে তদারকি শুরু করেছেন। এ ছাড়া প্রতিটি জেলা প্রশাসন থেকেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এলসির মাধ্যমে মিয়ানমার, মিসর ও তুরস্ক থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ বন্দরে খালাস করা শুরু হয়েছে।
এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে বর্ডার ট্রেডের মাধ্যমে টেকনাফ বন্দর দিয়ে আমদানিকৃত পেঁয়াজ এবং দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারি হাটগুলোতে পেঁয়াজ দ্রুত সারা দেশে নির্বিঘ্নে পৌঁছানো হচ্ছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
দেশে পেঁয়াজের মূল্য ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ট্রাক সেলে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে। ১৬টি ট্রাকের মাধ্যমে প্রতি কেজি ৪৫ টাকা মূল্যে এ পেঁয়াজ বিক্রি চলছিল। আজ থেকে এ ট্রাক সেলের সংখ্যা ৩৫টিতে উন্নীত করা হয়েছে। এতে স্বল্প আয়ের মানুষ ন্যায্য মূল্যে পেঁয়াজ কেনার সুযোগ পাচ্ছে।
সরকারি হিসাব মতে, দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ২৪ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে গত ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ২৩ দশমিক ৩ লাখ মেট্রিক টন। এর ৩০ শতাংশ পেঁয়াজ স্বাভাবিকভাবেই নষ্ট হয়। পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বছরে আমদানি হয়ে থাকে আট থেকে দশ লাখ মেট্রিক টন। হিসাব মোতাবেক দেশে পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। দেশের পেঁয়াজ সমৃদ্ধ অঞ্চলগুলোর পাইকারি হাট-বাজারে বিপুল পেঁয়াজ কেনা-বেচা হচ্ছে। ফলে সারা দেশের হাট-বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ পর্যাপ্ত। ফলে বাজারে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহের কোনো ঘাটতি নেই।